পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*丽开事国 বিজ্ঞানে সাহিত্যে কোথাও কোনো সীমা মানিতেছে না, দুর্লাভের রুদ্ধ জ্বারে অহোরাত্র প্রবল বেগে আঘাত করিতেছে। এই যে উদ্যত শক্তি, যাহার একদিকে ক্রীড়া ও অন্যদিকে কর্ম, ইহাই যথার্থ সুন্দর। রমণীর মধ্যে যেখানে আমরা লক্ষ্মীর প্রকাশ দেখিতে পাই সেখানে আমরা এক দিকে দেখি সাজসজা লীলামাধুৰ্য, আর-এক দিকে দেখি অক্লান্ত কর্মপরতা ও সেবানৈপূণ্য। এই উভয়ের বিচ্ছেদই কুগ্ৰী । বস্তুত, শক্তিই সৌন্দৰ্যরূপে আপনাকে প্ৰকাশ করে, আর শক্তিহীনতাই শৈথিল্যে ও অব্যৱস্থার মধ্য দিয়া কেবলই কদৰ্যতার পঙ্কের মধ্যে আপনাকে নিময় করে। কদৰ্যতাই মানুষের শক্তির পরাভব ; এইখানেই অস্বাস্থ্য, দারিদ্র্য, অন্ধ সংস্কার ; এইখানেই মানুষ বলে, “আমি হাল ছাড়িয়া দিলাম, এখন অদৃষ্ট যাহা করে।” এইখানেই পরস্পরের কেবল বিচ্ছেদ ঘটে, আরবন্ধ কর্ম শেষ হয় না, এবং যাহাঁই গড়িয়া छूनिष्ठ प्र३ि उाश३ बिब्रिट श्ना अए। लखिशैठाई यथार्थ बैीशनऊा। আমি জাহাজের ডেকের উপরে ইহাদের প্রচুর আমোদ-আহলাদের মধ্যেও ইহাই দেখিতে পাই। ইহাদের সমস্ত খেলাধুলার ভিতরে ভিতরে স্বভাবতই একটি বিধান দেখা দেয়। এইজন্য ইহাদের আমোদ-প্ৰমোদও কোনোমতে বিশৃঙ্খল হইয়া উঠে না। যথাসময়ে যথাবিহিত ভদ্রবেশ প্রত্যেককেই পরিয়া আসিতে হয় । পরস্পরের সঙ্গে আলাপ-পরিচয়ের ভিতরে ভিতরে নিয়ম প্রচ্ছন্ন আছে ; সেই নিয়মের সীমা লঙ্ঘন করিবার জো নাই। বিধানের উপরে নির্ভর করিয়া থাকে বলিয়াই ইহাদের আমোদ-আহ্লাদ এমন উচ্ছসিত প্রবল বেগে বিপত্তি ধাচাইয়া প্রবাহিত হইতে পারে। এই ডেকের উপরে আর কেহ নহে, কেবল আমাদের দেশের লোকে মিলিত হইয়াছে, সে দৃশ্য আমি মনে মনে কল্পনা না করিয়া থাকিতে পারি না। প্ৰথমেই দেখা যাইত, কোনো একই ব্যবস্থা দুইজনের মধ্যে খাটিত না। আমাদের অভ্যাস ও আচরণ পরম্পরের সঙ্গে আপনার মিল করিতে জানে না। যুরোপীয়দের মধ্যে একটা জায়গা আছে যেখানে ইহারা স্বতন্ত্র, আর-একটা জায়গা আছে যেখানে ইহারা সকলের। যেখানে ইহারা স্বতন্ত্র সে জায়গাটা ইহাদের প্রাইভেট । সেখানটা প্রচ্ছন্ন। সেখানে সকলের অবারিত অধিকার নাই এবং সেই অধিকারকে সকলেই সহজেই মানিয়া চলে। সেখানে তাহারা নিজের ইচ্ছা ও অভ্যাস অনুসারে আপনার ব্যক্তিগত জীবন বহন করে। কিন্তু, যখনই সেখান হইতে তাহারা বাহির হইয়া আসে তখনই সকলের বিধানের মধ্যে ধরা দেয়- সে জায়গায় কোনোমতেই তাহারা আপনার প্রাইভেটকে টানিয়া আনে না। এই দুই বিভাগ সুস্পষ্ট থাকাতেই পরস্পর মেলামেশা ইহাদের পক্ষে এত সহজ ও সুশৃঙ্খল। আমাদের মধ্যে এই বিভাগ নাই বলিয়া সমস্ত এলোমেলো হইয়া যায়, কেহ কোনোখানে সীমা মানিতে চায় না। আমরা এই ডেক পাইলে নিজের প্রয়োজনমত চালিতাম। পোটল-পুঁটলি যেখানে সেখানে ছড়াইয়া রাখিতাম। কেহ বা দাঁতন করিতাম, কেহ বা যেখানে খুশি বিছানা পাতিয়া পথ রোধ করিয়া নিদ্ৰা দিতাম, কেহ বা ইকার জল ফিরাইতাম ও কলিকাটা উপুড় করিয়া ছাই ও পোড়া তামাক যেখানে হােক একটা জায়গায় ঢালিয়া দিতাম, কেহ বা ঢাকরকে দিয়া শরীর দলাইয়া সশব্দে তেল মাখিতে থাকিতাম। ঘটিবাটি জিনিসপত্র কোথায় কী পড়িয়া থাকিত তাহার ঠিকানা পাওয়া যাইতনা, এবং ডাকাডাকি ইকাইকির অন্ত থাকিত না। ইহার মধ্যে যদি কেহ নিয়ম ও শৃঙ্খলা আনিতে চেষ্টমাত্র করিত তাহা হইলে অত্যন্ত অপমান বোধ করিতাম এবং মহা রাগারগির পালা পড়িয়া যাইত। তাহার পরে অন্য লোকের যে লেখাপড়া কাজকর্ম থাকিতে পারে, কিংবা মাঝে মাঝে সে তাহার অবসর ইচ্ছা করিতে পারে, সোমান্বন্ধে কাহারও চিন্তামাত্ৰ থাকিত না- হঠাৎ দেখা যাইত, যে বইটা পড়িতেছিলাম সেটা আর-একজন টানিয়া লইয়া পড়িতেছে ; আমার দূরবীনটা পাঁচজনের হাতে হাতে ফিরিতেছে, সেটা আমার হাতে ফিরাইয়া দিবার কোনো তাগিদ নাই ; অনায়াসেই আমার টেবিলের উপর হইতে আমার খাতটিা লইয়া কেহ টানিয়া দেখিতেছে, বিনা আহানে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করিয়া গল্প জুড়িয়া দিতেছে, এবং রসিক ব্যক্তি সময় অসমীয় বিচার না করিয়া উচ্চৈঃস্বরে গান গাহিতেছে, কণ্ঠে স্বরমাণুর্যের অভাব থাকিলেও কিছুমাত্র সংকোচ বোধ করিতেছে না। যেখানে যেটা পড়িত সেখানে সেটা পড়িয়াই থাকিত। যদি ফািল