পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8`२8 রবীন্দ্র-রচনাবলী দিন গেছে। সত্যের কোঠায় ব্যাঙ এ্যাপলোর চেয়ে বড়ো বই ছোটাে নয়। আমিও ব্যাঙকে অবজ্ঞা করতে চাই নে । এমন-কি, যথাস্থানে কবিপ্রেয়সীর হাসির সঙ্গে ব্যাঙের মক্‌মক্‌ হাসিকে এক পংক্তিতেও বসানো যেতে পারে, প্রেয়লী আপত্তি করলেও। কিন্তু, অতিবড়ে বৈজ্ঞানিক সাম্যতত্ত্বেও যে-হাসি সূর্বের, যে-হালি ওকৃবনস্পতির, যে-হালি এ্যাপলোর, সে-হাসি ব্যাঙের নয়। এখানে ওকে আনা হয়েছে জোর ক’রে মোহ ভাঙবার জন্তে । মোহের আবরণ তুলে দিয়ে যেটা ষা সেটাকে ঠিক তাই দেখতে হবে। উনবিংশ শতাব্দীতে মায়ার রঙে ঘেটা রঞ্জিন ছিল মাজ সেটা ফিকে হয়ে এসেছে ; সেই মিঠের জাভাসমাত্র নিয়ে ক্ষুধা মেটে না, বস্তু চাই । ‘প্রাণেন আধভোজনং’ বললে প্রায় বারো আনা অত্যুক্তি করা হয়। একটি আধুনিক মেয়ে কবি গত যুগের মুন্দরীকে খুব স্পষ্ট ভাষায় যে-সম্ভাষণ করেছেন সেটাকে তর্জমা করে দিই। ভঙ্গমায় মাধুরী সঞ্চার করলে বেখাপ হবে, চেষ্টাও সফল হবে না— তুমি স্বন্দরী এবং তুমি বাসি যেন পুরোনো একটা যাত্রার স্বর বাজছে সেকেলে একটা সারিন্দি যন্ত্রে । কিম্বা তুমি সাবেক আমলের বৈঠকখানায় যেন রেশমের আসবাব, তাতে রোদ পড়েছে । তোমার চোখে আয়ুহারা মুহূর্তের করা গোলাপের পাপড়ি যাচ্ছে জীর্ণ হয়ে । তোমার প্রাণের গন্ধটুকু অস্পষ্ট, ছড়িয়ে পড়া, ভাড়ের মধ্যে ঢেকে-রাখা মাথাম্বষা মসলার মতো তার কাজ । তোমার অতিকোমল স্বরের আমেজ আমার লাগে ভালো— তোমার ঐ মিলে মিশে-ষাওয়া রঙগুলির দিকে তাকিয়ে আমার মন ওঠে মেতে। আর আমার তেজ যেন টাকশালের নতুন পয়সা তোমার পায়ের কাছে তাকে দিলেম ফেলে । ধুলো থেকে কুড়িয়ে নাও, তার ঝকৃমকানি দেখে হয়তো তোমার মজা লাগবে। এই আধুনিক পয়সাটার দাম কম কিন্তু জোর বেশি, আর এ খুব স্পষ্ট, টং ক’রে