পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্যের পথে 86 & অভিধানের কোথাও এ শব্দ নেই। বৈষ্ণবপদাবলীতে ধে মিশ্রিত ভাষা চলে গেছে সেটা যে কেবলমাত্র হিন্দিভাষার অপভ্রংশ তা নয়, সেটাকে পদকর্তার ইচ্ছা ক'রেই রক্ষা করেছেন, কেননা অনুভূতির অসাধারণত ব্যক্ত করবার পক্ষে সাধারণ ভাষা সহজ নয়। ভাবের সাহিত্য মাত্রেই এমন একটা ভাষার স্বষ্টি হয় যে-ভাষা কিছু বা বলে, কিছু বা গোপন করে ; কিছু যার অর্থ আছে, কিছু আছে স্বর। এই ভাষাকে কিছু আড় ক’রে, বাকা করে, এর সঙ্গে রূপক মিশিয়ে, এর অর্থকে উলেট-পালোট ক'রে তবেই বস্তুবিশ্বের প্রতিঘাতে মাহষের মধ্যে ষে ভাবের বিশ্ব স্বষ্টি হতে থাকে তাকে সে প্রকাশ করতে পারে । নইলে কবি বলবে কেন “দেখিবারে জাথিপাখি ধায়।’ দেখবার আগ্রহ একটা সাধারণ ঘটনা মাত্র। সেই ঘটনাকে বাইরের জিনিস করে না রেখে তাকে মনের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হল যখন, কবি একটা অদ্ভূত কথা বললে, দেখিবারে আঁখিপাখি ধায় । আগ্রহ ধে পাখির মত্তন ধায় এটা মনের স্বই ভাষা, বিবরণের ভাষা নয় । গোধূলিবেলার অন্ধকারে রূপসী মন্দির থেকে বাইরে এল, এ ঘটনাটা বাহ ঘটনা এবং অত্যন্ত সাধারণ। কবি বললেন, নববর্ধার মেঘে বিদ্যুতের রেখা যেন দ্বন্দ্ব প্রসারিত করে দিয়ে গেল। এই উপমার যোগে বাহিরের ঘটনা আপন চিহ্ন একে দিয়ে গেল। আমাদের অস্তরে মন একে স্বষ্টির বিষয় করে তুলে আপন করে নিলে। কোনো এক অজ্ঞাতনাম গ্ৰীক কবির লিখিত কোনো-একটি শ্লোকের গন্ত অনুবাদ দিচ্ছি, ইংরেজি তর্জমার থেকে : আপেল গাছের ডালের ফঁাকে ফঁাকে ঝুরুঝুরু বইছে শরতের হাওয়া ; থর্থর করে কেঁপে-ওঠা পাতার মধ্যে থেকে ঘুম আসছে অবতীর্ণ হয়ে পৃথিবীর দিকে— ছড়িয়ে পড়ছে নদীর ধারার মতো। এই-যে কম্পমান ডালপালার মধ্যে মর্মরমুখর স্নিগ্ধ হাওয়ায় নিঃশব্দ নদীর মতো ব্যাপ্ত হয়ে পড়া ঘুমের রাত্রি, এ আমাদের মনের রাত্রি। এই রাত্রিকে আমরা আপন করে তুলে তবেই পূর্ণভাবে উপভোগ করতে পারি। কোনো চীনদেশীয় কবি বলছেন— পাহাড় একটানা উঠে গেছে বহুশত হাত উচ্চে ; সরোবর চলে গেছে শত মাইল, কোথাও তার ঢেউ নেই ; वाणि धू धू कब्रtरू निकणक उज ; শীতে গ্রীষ্মে সমান অক্ষুন্ন সবুজ দেওয়ার-বন ; নদীর ধারা চলেইছে, বিরাম নেই তার ;