পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী مOb\ শূন্যসভায় যত খুশি করুন বাবুয়ানা, সত্য হতে চান যদি তো বাহার-দেওয়া মানা । তাছাড়া ঐ পারিজাতের ছাকামিও ত্যাজ্য, মধুর করে বানিয়ে বলা নয় কিছুতেই ন্যায্য । বদল করে হল শেষে নিম্নরকম ভাষা— ‘আকাশ সে জন ধুলোয় ধোয়ায় নিরেট করে ঠাসা, রাতটা যেন কুলিমাগি কয়লাখনি থেকে এল কালে রঙের উপর কালির প্রলেপ মেখে ।” তার পরেকার বর্ণনা এই—“তা মাক-সাজার ধন্দে জগার থ্যাবড়া আঙ লগুলো দোক্তাপাতার গন্ধে দিনরাত্রি ল্যাপা । তাই সে জগা খ্যাপা যে মালাটাই গাথে তাতে ছাপিয়ে ফুলের বাস তামাকেরই গন্ধের হয় উৎকট প্রকাশ ।” ” নাতনি বললে বাধা দিয়ে, “আমি জানি জানি, কী বলে যে শেষ করেছ নিলেম অতুমানি । যে তামাকের গন্ধ ছাড়ে মালার মধ্যে, ওটায় সর্বসাধারণের গন্ধ নাড়ীর ভিতর ছোটগয় । বিশ্বপ্রেমিক, তাই তোমার এই তত্ত্ব— ফুলের গন্ধ অtলংকারিক, এ গন্ধটাই সত্য ।” আমি বললেম, “ওগো কন্তে, গলদ আছে মূলেই, এতক্ষণ যা তর্ক করছি সেই কথাটা ভুলেই । মালাটাই যে ঘোর সেকেলে, সরস্বতীর গলে অণর কি ওটা চলে । রিয়ালিসটিক প্রসাধন যা নব্যশাস্থে পড়ি— সেটা গলায় দড়ি ।” নাতনি আমার ঝণকিয়ে মাথা নেড়ে এক দৌড়ে চলে গেল আমার আশা ছেড়ে । শু্যামলী, শাস্তিনিকেতন ৩১ ডিসেম্বর, ১৯৩৮