() পরিশিষ্ট şi ©Ꮼ© মঙ্গল। অবশু, রাজ্যশাসন সম্পূর্ণ যন্ত্রসাধ্য নহে, তাহার মধ্যে রাগদ্বেষ ও পক্ষপাত আপনি আসিয়া পড়ে কিন্তু তাহ কিছুমাত্র প্রকাশ হইলে শাসনকার্ধের গৌরব নষ্ট হয়। আজকাল ইংরেজশাসনে এই নীতির ব্যতিক্রম দেখিতেছি । ম্যাকেঞ্জি সাহেব যখন বাংলার রাজপদে ছিলেন, যখন একেবারে অনেকগুলা অপ্রিয় বিধির প্রস্তাব উপলক্ষে সমস্ত দেশ স্বভাবতই স্থৰ হইয়া আছে, সেই সংকটের সময়, দেশের সেই দুর্ভাগ্যের সময়, সেই কঠোর বিলগুলি পাস করিবার সময় ম্যাকেঞ্জি সাহেব বঙ্গভূমির ক্ষতবেদনার উপরে অকারণে র্তাহার বাক্যহলাহলজালা যোগ করিয়া দিলেন । " বিল তো পাস হুইবেই। বিল-শ্রষ্টাদের ইচ্ছার কোনো বাধা নাই। কিন্তু যত নির্বিরোধে হয় ততই ভালো । যদি প্রজার ক্ষতস্থানে ছুরি চালাইতেই হয় সেট যাহাতে যথাসম্ভব অল্প বেদনায় সমাধা হয় সেই চেষ্টাই উচিত ; র্যাহার কিছুমাত্র দায়িত্ববোধ আছে তিনি সে-জায়গাটা অনাবশ্যক আঘাতে ব্যথিত রক্তবর্ণ করিয়া তোলেন না । কিন্তু উচ্চপদের যে স্বাভাবিক শাস্তি সংযম ও ক্ষম। তাহা ম্যাকেঞ্জি সাহেব দেখান নাই। তিনি নিজে রুগ্ন ছিলেন এবং রাজকাৰ্যকেও রোগাতুর করিয়া তুলিয়াছিলেন। অদ্য শাসনকার্য হইতে অবসর লইয়া ভারতভাণ্ডার হইতে বৃত্তিভোগ করিতে করিতেও তাহার ভূতপূর্ব প্ৰজাগণের প্রতি বিষোদগার করিতেছেন। ইহাতে অমিশ্র কুফল ছাড়া আর কিছু দেখি না । মুনিসিপাল বিল পাস করা যদি কর্তৃপক্ষের অভিপ্রেত হয় তবে ভূতপূর্ব বঙ্গাধিপ এ-সম্বন্ধে যতই চুপ করিয়া থাকেন ততই ভালো । তিনি বিলাতে বসিয়া থানার পরে অসংযত বক্তৃতা করিয়া উপদ্রব বাড়াইয়া তুলিতেছেন তিনি কথায় বার্তায় ভাবে ভঙ্গিতে বাঙালিবিদ্বেষ ও স্বজাতিপক্ষপাত দেখাইয়া কেবল যে আত্মমর্যাদা লাঘব করিতেছেন তাহ নহে শাসনকার্যকেও কণ্টকাকীর্ণ করিয়া তুলিতেছেন। গবর্মেন্টের উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের আত্মবিশ্বতি ও ধৈর্ধচুতি আমরা বর্তমানকালের একটা কুলক্ষণ বলিয়া গণ্য করি। ইংরেজ ও দেশীয়দের মধ্যে উত্তরোত্তর যে বিচ্ছেদ ও বিরোধ বাড়িয়া উঠিতেছে তাহা যদি রাজপুরুষদিগকেও স্পর্শ করে, তাহারাও যদি এ অবস্থার প্রতিকারচেষ্টা না করিয়া একটা দলভূক্ত হইয়া পড়েন তবে আমাদের পক্ষে সেটা সংকটের অবস্থা । সেই রকমের যেন লক্ষণ দেখা যাইতেছে। অবশু, স্বজাতিপ্রেম সকল সময়েই স্বাভাবিক, কিন্তু আজকাল যেন ভারতবর্ষের সরকারি ও বেসরকারি ইংরেজ ক্রমশই ঘনিষ্ঠভাবে মিলিত হইতেছে। ভারতবর্ষীয় ইংরেজি খবরের কাগজের নাড়ীতেও যখন বেগ প্রকাশ পায় তখন গবর্মন্টেরও চক্ষু লাল এবং গাত্র উত্তপ্ত দেখিতে পাই।
