পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অজ্ঞান হয়ে থাকিস বলেই তো স্বপ্নের চোটে তোরা গুঙরে মরিস । প্ৰজা । রাজার পেয়াদা এসে যখন মার লাগায় ? সেটাকে তুমি স্বপ্ন বল নাকি ? ধনঞ্জয় । তা না তো কী ? স্বপ্নের হাজার লক্ষ মুখোশ আছে ; রাজার মুখোশ পরেও আসে— তোদের অচৈতন্য নিয়েই তোদের সে মারে, তার হাতে আর কোনো অস্ত্র নেই । আমি আপন মনের মারেই মরি শেষে দশ জনারে দোষী করি।-- আমি চোখ বুজে পথ পাই নে বলে কেঁদে ভাসাই পাড়া । দেখ, আমি এই কথা তোদের বলতে এসেছি— সংসারে তোরাই দুঃখ এনেছিস । প্ৰজা । সে কী কথা ঠাকুর, আমরা দুঃখ পাই, আমরা তো দুঃখ দিই নে । আমাদের সে শক্তি নেই । ধনঞ্জয় । ওরে বোকা, মার খাবার জন্যে যে তৈরি হয়ে আছে মারের ফসল ফলাবার মাটি সে যে চষে রেখেছে। তোদেরই অপরাধ সব চেয়ে বেশি- তোরা তোদের অন্তর্যামী ঠাকুরকে লজ্জা দিয়েছিস, তাই এত দুঃখ । প্ৰজা । আমরা কী করব বলে দাও । ধনঞ্জয় । আর কত বলব ? বার বার বলছি ভয় নেই, ভয় নেই, ভয় নেই । कीन् নাই ভয়, নাই ভয় নাই রে । থাক পড়ে থাক ভয় বাইরে ! জাগো মৃত্যুঞ্জয় চিত্তে Co-Co-नऊँन-नृत्डा, ওরে মন বন্ধনছিন্ন দাও তালি তাই তাই তাই রে । প্ৰজা । ঠাকুর, ঐ যেন কে আসছে ? Greg | VONPONS Cf | প্ৰজা । কী জানি, খুনে হবে কি ডাকাত হবে, এই অন্ধকার রাত্তিরে বেরিয়েছে। ধনঞ্জয় । খুনেকে তোরাই খুনে করিস, ডাকাতকে করে তুলিস ডাকাত । খাড়া দাড়িয়ে থাক । প্ৰজা । প্ৰভু, বিপদ ঘটতে পারে । আমরা বরঞ্চ একটু সরে দাড়াই- একেবারে সামনে এসে পড়বে- তখন ধনঞ্জয় । ওরে বোকারা, পিছন দিকে বিপদ যখন মারে তখন আর বঁাচোয়া নেই- বুক পেতে দিতে পারিস, বিপদ তা হলে নিজেই পিছন ফিরবে । বসন্তরায় ও একজন পাঠানের প্রবেশ পাঠান । কোন হ্যায় রে ! প্ৰজা । দোহাই বাবা, আমরা চাবি লোক পাঠান । রাত্তিরে কী করতে বেরিয়েছিস ? ধনঞ্জয় । রাত্তিরে যারা বেরোয় তাদের সঙ্গে মিলন হবে বলেই বেরিয়েছি । দিনে মিলি কাজের লোকের সঙ্গে, রাত্তিরে মিলি অকাজের লোকের সঙ্গে । পাঠান । ভয় ডর নেই ? ধনঞ্জয় । দাদা, তোমারও তো ভয় ডর নেই দেখছি। দুই নিৰ্ভয়ে সামনাসামনি দেখাসাক্ষাৎ হল