পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্ৰহাসিনী মিষ্টান্বিতা যে মিষ্টান্ন সাজিয়ে দিলে হাড়ির মধ্যে শুধুই কেবল ছিল কি তায় শিষ্টতা । যত্ন করে নিলেম তুলে গাড়ির মধ্যে, দুরের থেকেই বুঝেছি তার মিষ্টতা । সে মিষ্টতা নয় তো কেবল চিনির সৃষ্টি, রহস্য তার প্রকাশ পায় যে অন্তরে তাহার সঙ্গে অদৃশ্য কার মধুর দৃষ্টি মিশিয়ে গেছে অশ্রুত কোন মন্তরে । বাকি কিছুই রইল না তার ভোজন-অন্তে, বহুত তবু রইল বাকি মনটাতেএমনি করেই দেবতা পাঠান ভাগ্যবান্তে অসীম প্ৰসাদ সসীম ঘরের কোণটাতে । সে বর তাহার বহন করল। যাদের হস্ত হঠাৎ তাদের দর্শন পাই সুক্ষণেইরঙিন করে তারা প্ৰাণের উদয় অস্ত, দুঃখ যদি দেয়। তবুও দুঃখ নেই । হেন গুমর নেইকো আমার, স্তুতির বাক্যে ভোলাব মন ভবিষ্যতের প্রত্যাশায়, জানি নে তো কোন খেয়ালের ক্রুর কটাক্ষে কখন বাজ হানতে পার অত্যাশায় । দ্বিতীয়বার মিষ্ট হাতের মিষ্ট অন্নে ভাগ্য আমার হয় যদি হোক বঞ্চিত, নিরতিশয় করব না শোক তাহার জন্যে ধ্যানের মধ্যে রইল যে ধন সঞ্চিত । আজ বাদে কাল আদর যত্ন না হয়। কমল, গাছ মরে যায় থাকে তাহার টবটা তো । জোয়ারবেলায় কানায় কানায় যে জল জমল ভাটার বেলায় শুকোয় না। তার সবটা তো । অনেক হারাই, তবু যা পাই জীবনযাত্রা তাই নিয়ে তো পেরোয় হাজার বিস্মৃতি । রইল। আশা, থাকবে ভরা খুশির মাত্ৰা । যখন হবে চরম শ্বাসের নিঃসৃতি । বলবে তুমি, ‘বালাই ! কেন বকছ মিথ্যে, প্ৰাণ গেলেও যত্নে রবে অকুণ্ঠা ।” বুঝি সেটা, সংশয় মোর নেইকো চিত্তে, মিথ্যে খোটায় খোচাই তবু আগুনটা । 8S