পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

వ\ల রবীন্দ্র-রচনাবলী আজি দখিন দুয়ার খোলা, এসো হে আমার বসন্ত, এসো । দিব হৃদয়দোলায় দোলা, এসো হে আমার বসন্ত, এসে । নব শু্যামল শোভন রথে এসো বকুল-বিছানো পথে, এসো বাজায়ে ব্যাকুল বেণু মেখে পিয়ালফুলের রেণু, এসে হে আমার বসন্ত, এসো । এসো ঘনপল্লবপুঞ্জে, এসো হে। এসো বনমল্লিকাকুঞ্জে, এসো হে। भूपूर মধুর মদির হেসে এসো পাগল হাওয়ার দেশে— তোমার উতলা উত্তরীয় তুমি আকাশে উড়ায়ে দিয়ে, এসো হে আমার বসন্ত, এসো | চৈত্রসংক্রাস্তির রাতে আবার মিলন । মহিষী বললে, “দেখলেম নাচ । যেন মঞ্জরিত শাল তরুশ্রেণীতে বসন্তবাতাসের অধৈর্য। যেন চন্দ্রলোকের শুক্লপক্ষে লেগেছে তুফান। কেবল একজন কুত্ৰ কেন রসভঙ্গ করলে। ও যেন রাহুর অনুচর। কী গুণে ও পেল প্রবেশের অধিকার ।” রাজা স্তব্ধ হয়ে রইল। তার পরে উঠল গেয়ে, “অমুন্দরের পরম বেদনায় সুন্দরের আহবান। স্বর্যরশ্মি কালো মেঘের ললাটে পরায় ইন্দ্ৰধনু, তার লজ্জাকে সাস্তুনা দেবার তরে। মর্তের অভিশাপে স্বর্গের করুণা যখন নামে তখনি তো সুন্দরের আবির্ভাব। প্রিয়তমে, সেই করুণাই কি তোমার হৃদয়কে কাল মধুর করে নি।” “ন। মহারাজ, না” বলে মহিষী দুই হাতে মুখ ঢাকলে । রাজার কণ্ঠের স্বরে লাগল অশ্রুর ছোওয়া। বললে, “যাকে দয়া করলে যেত তোমার হৃদয় ভরে, তাকে ঘৃণা করে কেন পাথর করলে মনকে ৷” “রসবিকৃতির পীড়া সইতে পারি নে” বলে মহিষী উঠে পড়ল আসন থেকে।