পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সুচনা রাজর্ষি সম্বন্ধে কিছু বলবার জন্তে অনুরোধ পেয়েছি। বলবার বিশেষ কিছু নেই। এর প্রধান বক্তব্য এই যে এ আমার স্বপ্নলব্ধ উপন্যাস । বালক পত্রের সম্পাদিক। আমাকে ঐ মাসিকের পাতে নিয়মিত পরিবেশনের কাজে লাগিয়ে দিয়েছিলেন । তার ফল হ’ল এই যে প্রায় একমাত্র আমিই হলুম তার ভোজের জোগানদার। একটু সময় পেলেই মনটা কী লিখি কী লিখি করতে থাকে । রাজনারায়ণ বাবু ছিলেন দেওঘরে । তাকে দেখতে যাব বলে বেরনো গেল । রাত্রে গাড়ির আলোটা বিশ্রামের ব্যাঘাত করবে বলে তার নিচেকার আবরণটা টেনে দিলুম। এংলোইণ্ডিয়ান সহযাত্রীর মন তাতে প্রসন্ন হ’ল না, ঢাকা খুলে দিলেন । জাগা অনিবার্য ভেবে একটা গল্পের প্লট মনে আনতে চেষ্টা করলুম। ঘুম এসে গেল। স্বপ্নে দেখলুম একটা পাথরের মন্দির। ছোটো মেয়েকে নিয়ে বাপ এসেছেন পুজো দিতে। সাদাপাথরের সিড়ির উপর দিয়ে বলির রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। দেখে মেয়েটির মুখে কী ভয় কী বেদন । বাপকে সে বার বার করুণ স্বরে বলতে লাগল, বাবা এত রক্ত কেন । বাপ কোনো মতে মেয়ের মুখ চাপ দিতে চায়, মেয়ে তখন নিজের আঁচল দিয়ে রক্ত মুছতে লাগল। জেগে উঠেই বললুম গল্প পাওয়া গেল। এই স্বপ্নের বিবরণ জীবন স্মৃতিতে পূর্বেই লিখেছি, পুনরুক্তি করতে হ’ল। আসল গল্পট ছিল প্রেমের অহিংস পূজার সঙ্গে হিংস্ৰ শক্তিপূজার বিরোধ। কিন্তু মাসিক পত্রের পেটুক দাবি সাহিত্যের বৈধ ক্ষুধার মাপে পরিমিত হতে চায় না। ব্যঞ্জনের পদসংখ্যা বাড়িয়ে চলতে হোলো । 俄冷