পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লুকাইছে ছদ্মবেশে । ওই যে দাড়ায়ে নতশির মৃক সবে- স্নান মুখে লেখা শুধু শত শতাব্দীর বেদনার করুণ কাহিনী ; স্কন্ধে যত চাপে ভার বহি চলে।“মন্দগতি, যতক্ষণ থাকে প্ৰাণ তার— তার পরে সন্তানেরে দিয়ে যায় বংশ বংশ ধরি, নাহি ভৎসে অদৃষ্টেরে, নাহি নিন্দে দেবতারে স্মরি, শুধু দুটি অন্ন খুঁটি কোনোমতে কষ্টক্লিষ্ট প্ৰাণ রেখে দেয় বঁাচাইয়া । সে অন্ন যখন কেহ কাডে, সে প্ৰাণে আঘাত দেয় গর্বািন্ধ নিষ্ঠুর অত্যাচারে, মরে সে নীরবে । এই—সব মৃঢ় স্নান মূক মুখে দিতে হবে ভাষা- এই-সব শ্রান্ত শুষ্ক ভগ্ন বুকে মুহূর্ত তুলিয়া শির একত্র দাড়াও দেখি সবে, যার ভয়ে তুমি ভীত সে অন্যায় ভীরু তোমা চেয়ে, যখনি জাগিবে তুমি তখনি সে পলাইবে ধেয়ে ; যখনি দাড়াবে তুমি সম্মুখে তাহার, তখনি সে পথাকুকুরের মতো সংকোচে সত্ৰাসে যাবে মিশে ; দেবতা বিমুখ তারে, কেহ নাহি সহায় তাহার, মুখে করে আস্ফালন, জানে সে হীনতা আপনার SAN (AN SAN(arN কবি, তবে উঠে এসো— যদি থাকে প্ৰাণ তবে তাই লাহো সাথে, তবে তাই করো আজি দান । বড়ো দুঃখ, বড়ো ব্যথা— সম্মুখেতে কষ্টের সংসার অন্ন চাই, প্ৰাণ চাই, আলো চাই, চাই মুক্ত বায়ু, সাহসবিস্তৃত বক্ষপট । এ দৈন্যমাঝারে, কুবি, একবার নিয়ে এসো স্বাগ হতে বিশ্বাসের ছবি । এবার ফিরাও মোরে, লয়ে যাও সংসারের তীরে হে কল্পনে, রঙ্গময়ী ! দুলায়ো না সমীরে সমীরে তরঙ্গে তরঙ্গে আর, ভুলায়ো না মোহিনী মায়ায় । বিজন বিষাদঘন অন্তরের নিকুঞ্জচ্ছায়ায় রেখো না বসায়ে আর । দিন যায়, সন্ধ্যা হয়ে আসে । নিশ্বসিয়া কেঁদে ওঠে বন । বাহিরিনু হেথা হতে উন্মুক্ত অম্বরতলে, ধূসরপ্রসর রাজপথে