পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রায়শ্চিত্ত ১২৩ ধনঞ্জয়। তবু শোনাতে হবে । রাজা হয়েছে বলেই কি সে এমন হতভাগা যে ভগবান তাকে সত্য কথা শুনতে দেবেন না ? ওরে, জোর করে শুনিয়ে আসব। ৫ । ও ঠাকুর, র্তার জোর যে আমাদের চেয়ে বেশি— র্তারই জিত হবে। ধনঞ্জয। দুর বঁাদর, এই বুঝি তোদের বুদ্ধি ! যে হারে তার বুঝি জোর নেই! তার জোর যে একেবারে বৈকুণ্ঠ পর্যন্ত পৌছোয় তা জানিস ? ৬। কিন্তু ঠাকুর, আমরা দূরে ছিলুম, লুকিয়ে বঁচিতুম– একেবারে রাজার দরজায় গিয়ে পড়ব, শেষে দায়ে ঠেকলে আর পালাবার পথ থাকবে না। ধনঞ্জয় । দেখ, পাচকড়ি, অমন চাপাচুপি দিয়ে রাখলে ভালো হয় না। যতদূর পর্যন্ত হবার তা হতে দে, নইলে কিছুই শেষ হতে চায় না। যখন চূড়ান্ত হয় তখনই শান্তি হয় । ৭ । তোরা অত ভয় করছিস কেন ? বাবা যখন আমাদের সঙ্গে যাচ্ছেন উনি আমাদের বঁচিয়ে আনবেন । ধনঞ্জয় । তোদের এই বাবা যার ভরসায় চলেছে তার নাম কর। বেটার কেবল তোরা বাচতেই চাস্— পণ করে বসেছিস যে মরবি নে। কেন, মরতে দোষ কী হয়েছে ? যিনি মারেন তার গুণগান করবি নে বুঝি ! ওরে, সেই গানটা ধর ।— গান বলে ভাই, ধন্য হরি। বঁাচান বঁচি, মারেন মরি। ধন্য হরি সুখের নাটে, ধন্য হরি রাজ্যপাটে । ধন্য হরি শ্মশান-ঘাটে— ধন্য হরি, ধন্য হরি । সুধা দিয়ে মাতান যখন ধন্য হরি, ধন্য হরি । ব্যথা দিয়ে কাদণন যখন ধন্য হরি, ধন্য হরি। আত্মজনের কোলে বুকে ধন্য হরি হাসিমুখে— ছাই দিয়ে সব ঘরের সুখে ধন্য হরি, ধন্য হরি। 3 ||3: