পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

外雷g顶 ᏔᏱ8Ꮤ2 তাহার বয়স বাড়িয়া উঠিতে লাগিল, ততই সখার পরিবর্তে একটি একটি করিয়া সখী জুটিতে লাগিল। এমনকি, এখন তাহার বাবার লিখিবার ঘরেও তাঁহাকে আর দেখিতে পাওয়া যায় না। আমি তো তাহার সহিত একপ্রকার আড়ি করিয়াছি। কত বৎসর কাটিয়া গেল। আর-একটি শরৎকাল আসিয়াছে। আমার মিনির বিবাহের সম্বন্ধ স্থির হইয়াছে। পূজার ছুটির মধ্যেই তাহার বিবাহ হইবে। কৈলাসবাসিনীর সঙ্গে সঙ্গে আমার ঘরের আনন্দময়ী পিতৃভবন অন্ধকার করিয়া পতিগৃহে যাত্রা করিবে। প্রভাতটি অতি সুন্দর হইয়া উদয় হইয়াছে। বুর্ধর পরে এই শরতের নূতনধীেত রৌদ্র যেন সোহাগায়-গলানো নির্মল সোনার মতো রঙ ধরিয়াছে। কলিকাতার গলির ভিতরকার ইষ্টকজর্জর অপরিচ্ছন্ন ঘেঁষাৰ্ঘেষি বাড়িগুলির উপরেও এই রৌদ্রের আভা একটি অপরাপ লাবণ্য বিস্তার করিয়াছে। আমার ঘরে আজ রাত্রি শেষ হইতে-না-হইতেসানাই বাজিতেছে। সে বাঁশি যেন আমার বুকের পঞ্জরের হাড়ের মধ্য হইতে কাদিয়া কাদিয়া বাজিয়া উঠিতেছে। করুণ ভৈরবী রাগিণীতে আমার আসন্ন বিচ্ছেদব্যথাকে। শরতের রৌদ্রের সহিত সমস্ত বিশ্বজগৎময় ব্যাপ্ত করিয়া দিতেছে। আজ আমার মিনির বিবাহ । ] সকাল হইতে ভারি গোলমাল, লোকজনের আনাগোনা। উঠানে বঁাশ বাধিয়া পাল খাটানো হইতেছে ; বাড়ির ঘরে ঘরে এবং বারান্দায় ঝাড় টাঙাইবার ঠংঠাং শব্দ উঠিতেছে ; হাকডাকের সীমা নাই । দাড়াইল । আমি প্রথমে তাহাকে চিনিতে পারিলাম না। তাহার সে বুলি নাই। তাহার সে লম্বা চুল নাই, তাহার শরীরে পূর্বের মতো সে তেজ নাই। অবশেষে তাহার হাসি দেখিয়া তাহাকে চিনিলাম। কহিলাম, “কী রে রহমত, কবে আসিলি।” সে কহিল, “কাল সন্ধ্যাবেলা জেল হইতে খালাস পাইয়াছি।” কথাটা শুনিয়া কেমন কানে খট করিয়া উঠিল। কোনো খুনীকে কখনো প্রত্যক্ষ দেখি নাই, ইহাকে দেখিয়া সমস্ত অন্তঃকরণ যেন সংকুচিত হইয়া গেল। আমার ইচ্ছা করিতে লাগিল, আজিকার এই শুভদিনে এ লোকটা এখােন হইতে গেলেই ভালো হয় । আমি তাহাকে কহিলাম, “আজ আমাদের বাড়িতে একটা কাজ আছে, আমি কিছু ব্যস্ত আছি, তুমি আজ RNg ” কথাটা শুনিয়াই সে তৎক্ষণাৎ চলিয়া যাইতে উদ্যত হইল, অবশেষে দরজার কাছে গিয়া একটু ইতস্তত করিয়া কহিল, “খোখীকে একবার দেখিতে পাইব না ?” তাহার মনে বুঝি বিশ্বাস ছিল, মিনি সেই ভাবেই আছে। সে যেন মনে করিয়াছিল, মিনি আবার সেই পূর্বের মতো 'কাবুলিওয়ালা, ও কাবুলিওয়ালা করিয়া ছুটিয়া আসিবে, তাহাদের সেই অত্যন্ত কৌতুকাবহ পুরাতন হাস্যালাপের কোনােরূপ ব্যত্যয় হইবে না। এমনকি, পূর্ববন্ধুত্ব স্মরণ করিয়া সে একবাক্স আঙুর এবং কাগজের মোড়কে কিঞ্চিৎ কিসমিস বাদাম বােধ করি কোনো স্বদেশীয় বন্ধুর নিকট হইতে চাহিয়া-চিন্তিয়া সংগ্ৰহ করিয়া আনিয়াছিল- তাহার সে নিজের বুলিটি আর ছিল না। আমি কহিলাম, “আজ বাড়িতে কাজ আছে, আজ আর কাহারও সহিত দেখা হইতে পরিবে না।” সে যেন কিছু ক্ষুন্ন হইল। স্তব্ধভাবে দাড়াইয়া একবার স্থির দৃষ্টিতে আমার মুখের দিকে চাহিল, তার পরে ‘বাবু সেলাম বলিয়া দ্বারের বাহির হইয়া গেল। ፯. আমার মনে কেমন একটু ব্যথা বোধ হইল। মনে করিতেছি। তাহাকে ফিরিয়া ডাকিব, এমন সময়ে দেখি সে আপনি ফিরিয়া আসিতেছে। কিছু আসিয়া কহিল,"এই অঞ্চ এবং কিঙ্কিং কর্মস কাম থেষ্টর জন্য অলিছিলাম তাহাকে ויין