পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

¢२b" রবীন্দ্র-রচনাবলী অপুর্বতারই উত্তেজনা। রূপের দিকে বা ভাবের দিকে একটা-কিছু নতুন পাচ্ছে বলেই তার আগ্রহ– তখন সুধীন্দ্র দত্তও ছিল তার সঙ্গী। তার থেকে আমার বিশ্বাস আপনার এই সমর্থন পেত যে, মনের মধ্যে রচনার একটি বিশেষ ঋতুর সমাগম হয়েছে— তাকে পূরবীর ঋতু বা বলাকার ঋতু বললে চলবে না। পূরবী ও মহুয়ার মাঝখানে আর-একদল কবিতা আছে– সেগুলি অন্য জাতের। তাদের মধ্যে নটরাজ ও ঋতুরঙ্গই প্রধান । নৃত্যাভিনয়ের উপলক্ষ নিয়ে এগুলি রচিত হয়েছিল কিন্তু এরাও স্বভাবতই উপলক্ষকে অতিক্রম করেছে। আর কোনোখানেই শাস্তিনিকেতনের মতে ঋতুর লীলারঙ্গ দেখি নি— তারই সঙ্গে মানবভাষায় উত্তর প্রত্যুত্তর কিছুকাল থেকে আমার চলছে। তার রীতিমত শুরু হয়েছে শারদোৎসবে— তার পরে ঋতুগীতির প্রবাহ বেয়ে এসে পড়েছিল ঋতুরঙ্গে। বিষয় এক তৰু প্রভেদ যথেষ্ট। সেই প্রভেদ যদি না থাকত তা হলে লেখবার উৎসাহই থাকত না। মহুয়ার কবিতা যখন পড়বে তখন আমার স্বভাবের এই কথাটা মনে রেখো। এই বইয়ের প্রথমে ও সব-শেষে যে-গুটিকয়েক কবিতা আছে সেগুলি মহুয়া পর্যায়ের নয়। সেগুলি ঋতু-উৎসব পর্যায়ের । দোলপূর্ণিমায় আবৃত্তির জন্যেই এদের রচনা করা হয়েছিল। কিন্তু নববসন্তের আবির্ভাবই মহুয়া কবিতার উপযুক্ত ভূমিকা ব’লে নকিবের কাজে ওদের এই গ্রন্থে আহবান করা হয়েছে। * মহুয়া নামটা নিয়ে তোমার মনে একটা দ্বিধা হয়েছিল জানি । কাব্যের বা কাব্যসংকলন-গ্রন্থের নামটাকে ব্যাখ্যামুলক করতে আমার প্রবৃত্তি হয় না। নামের দ্বারা আগেভাগে কবিতার পরিচয়কে সম্পূর্ণ বেঁধে দেওয়াকে আমি অত্যাচার মনে করি। কবিতার অতিনিদিষ্ট সংজ্ঞা প্রায়ই দেওয়া চলে না। আমি ইচ্ছা করেই মহুয়া নামটি দিয়েছি, নাম পাছে ভাষ্যরূপে কর্তৃত্ব করে এই ভয়ে। অথচ কবিতাগুলির সঙ্গে মহুয়া নামের একটুখানি সংগতি আছে— মহুয়া বসন্তেরই অনুচর, আর ওর রসের মধ্যে প্রচ্ছন্ন আছে উন্মাদন । যাই হ’ক, অর্থের অত্যন্ত বেশি সুসংগতি নেই বলেই কাব্যগ্রন্থের পক্ষে এ নামটি উপযুক্ত বলে আমি বিশ্বাস করি।” কবির স্বহস্তাঙ্কিত নামপত্র এবং উৎসর্গকবিতাটি প্রচলিত সংস্করণের মতো রচনাবলী-সংস্করণ মহুয়াতেও মুদ্রিত হইল । বনবাণী বনবাণী ১৩৩৮ সালের আশ্বিন মাসে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। রচনাবলীসংস্করণে গ্রন্থটির বনবাণী’ এবং বৃক্ষরোপণ উৎসব’ কেবল এই দুইটি কবিতা-অংশ