পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\Str রবীন্দ্র-র চনাবলী সৌন্দর্যের কাজ প্রকৃতির উদ্দেশ্য- জানানো নহে, অনুভব করানো। চারি দিক হইতে কেবল নানা উপায়ে হৃদয় আকর্ষণের চেষ্টা হইতেছে। যে জড়হাদয় তাহাকেও মুগ্ধ করিতে হইবে, দিবানিশি তাহার কেবল এই যত্ন । তাহার প্রধান ইচ্ছা এই যে, সকলের সকল ভালো লাগে, এত ভালো লাগে যে আপনাকে বা অপরকে কেহ যেন বিনাশ না করে, এত ভালো লাগে যে সকলে সকলের অনুকূল হয়। কারণ, এই ইচ্ছার উপর তাহার সমস্ত শুভ তাহার অস্তিত্ব নির্ভর করিতেছে! প্ৰথম অবস্থায় শাসনের দ্বারা প্ৰকৃতির এই উদ্দেশ্য সাধিত হয়। প্রথমে দেখিলে— জগৎকে ঘুষি মারিলে তোমার মুষ্টিতে গুরুতর আঘাত লাগে, ক্ৰমে দেখিলে- জগতের সাহায্য করিলে সেও তোমার সাহায্য করে। এরূপ শাসনে এরূপ স্বার্থপরতায় জগতের রক্ষা হয় বটে; কিন্তু তাহাতে আনন্দ কিছুই নাই, তাহাতে জড়িত্ব ও দাসত্বই অধিক। এইজনা প্ৰকৃতিতে যেমন শাসনও আছে তেমনি সৌন্দৰ্য্যও আছে। প্রকৃতির অভিপ্ৰায় এই, যাহাতে শাসন চলিয়া গিয়া সৌন্দর্যের বিস্তার হয়। শাসনের রাজদণ্ড কাডিয়া লইয়া সৌন্দর্যের মাথায় রাজছত্র ধরাই প্রকৃতির চরম উদ্দেশা! প্রকৃতি যদি নিষ্ঠুর শাসনপ্রিয় হইত, তাহা হইলে সৌন্দর্যের আবশ্যকই থাকিত না। তাহা হইলে প্ৰভাত মধুর হইত না, ফুল মধুর হইত না, মনুষ্যের মুখশ্ৰী। মধুর হইত না। এই সকল মাধুর্যের দ্বারা বেষ্টিত হইয়া আমরা ক্রমশ স্বাধীনতার জনা প্ৰস্তুত হইতেছি। আমরা ভালোবাসিব বলিয়া জগতের হিত সাধন করিব ; তখন ভয় কোথায় থাকিবে ? তখন সৌন্দর্য জগতের চতুর্দিকে বিকশিত হইয়া উঠিয়াছে ; অর্থাৎ আমাদের হৃদয়কমলশায়ী সুপ্ত সৌন্দর্য জাগ্রত হইয়া উঠিয়াছেন। তিনি জাগিয়াই আমাদের চতুর্দিকস্থ শাসনের সিপাইগুলোর নাম কাটিয়া দিয়াছেন, স্বাধীনতার পথপ্ৰদৰ্শক কবিরা সেই সৌন্দর্যের কবি, তাহারা সেই স্বাধীনতার গান গাহিতেছেন, তাহারা, সজীব মসুবলে হৃদয়ের বন্ধন মোচন করিতেছেন। তাহারা সেই শাসনহীন স্বাধীনতার জন্য আমাদের হৃদয়ে সিংহাসন নির্মাণ করিতেছেন, সেই মহারাজা-কর্তৃক রক্তপাতহীন জগৎজয়ের জন্য প্রতীক্ষা করিয়া রহিয়াছেন; কবিরা তাহারই সৈন্য। তাহারা উপদেশ দিতে আসেন নাই ; সজীবতা ও সৌন্দর্য লাভ করিবার জন্য BD BB BD BBDB BB kBBDD BBuDS DBDS DBBD DDDB BBB SBBSBu D euSJ BBuBS BBB uDSS DBDBBBB uuBB S BDBOu DDBB BB BDuuBS BHuBuaB 0BBBBBB BBBBBBL DBBBBDB BDBB EE গাহিয়াছেন। ফুল চিরকাল ফুটিবে, সমীরণ চিরকাল বহিবে, পাখি চিরকাল ডাকিবে, এবং এই ফুলের মধ্যে কবির স্মৃতি বিকশিত, এই সমীরণের মধ্যে কবির স্মৃতি প্রবাহিত, এই পাখির গানে কবির গান বাজিয়া ওঠে। কবির নাম নিজীবী পাথরের মধ্যে ক্ষোদিত নহে, কবির নাম প্ৰভাতের নব নব বিকশিত বিচিত্ৰবৰ্ণ ফুলের অক্ষরে প্রত্যহ নূতন করিয়া লিখিত হয়। কবি প্রিয়, কারণ, তিনি যাহাদিগকে ভালোবাসিয়া কবি হইয়াছেন তাহারা চিরকাল প্ৰিয়, কোনোকালে তাহারা অপ্ৰিয় ছিল না, কোনোকালে তাহারা অপ্ৰিয় হইবে না। পুরাতন কথা যাহারা বলেন “সকল কবিরা ঐ এক কথাই বলিয়া আসিতেছেন, নূতন কী বলিতেছেন ?” তাহাদের কথার আর উত্তর দিবার কী আবশ্যক আছে? এক কথায় তাহদের উত্তর দেওয়া যায়। পুরাতন কথা বলেন বলিয়াই কবিরা, কবি। তাহারা নূতন কথা বলেন না, নূতনকে বিশ্বাস করে কে ? নূতনকে অসন্দিগ্ধচিত্তে প্ৰাণের অন্তঃপুরের মধ্যে কে ডাকিয়া লইয়া যাইতে পারে ? তাহার বংশাবলীর খবর