পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8>心 রবীন্দ্র-রচনাবলী গ্ৰাম্যছবি এই কাব্যে বাণিত পল্লীচিত্র গদে রূপান্তরিত করো। এবার ফিরাও মোরে এই কবিতায় যে ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে কী তার উপলক্ষ। কবি নিজেকে কোন সংকল্পে, উদবোধিত করছেন। তিনি যে-গান শোনাতে প্ৰস্তুত হলেন তার মর্মকথা কী। মানবলোকের মর্মস্থানে কবি যে-দেবতাকে উপলব্ধি করেছেন মানুষের ইতিহাসে তার আহবান কী রকম কাজ করে। নমুনালোকালয়ে কর্মের অন্ত নেই কোথাও বা প্রলয়ের আগুন লেগেছে, কোথাও বা যুদ্ধের শঙ্খ বেজেছে, কোথাও বা শোকের ক্ৰন্দনে আকাশ হয়েছে ধবনিত, অন্ধকারাগারে বন্ধনজৰ্জর অনাথা সহায় প্রার্থনা করছে, স্ফীতকায় অপমানদানব লক্ষ মুখ দিয়ে অক্ষামের বক্ষ হতে রক্তশোষণ ক’রে পান করছে, স্বার্থোদ্ধত অবিচার বাথিতের বেদনাকে পরিহাস করছে, ভীত ক্রীতদাস সংকোচে আত্মগোপন করেছে—ইত্যাদি—ইত্যাদি— কিন্তু তুমি কবি, পলাতক বালকের মতো, কেবল বিষঃতরুচ্ছায়ায় বনগন্ধবহী তপ্ত বাতাসে দিন কাটিয়ে দিলে একলা বাশি বাজিয়ে। ওঠে কবি, তোমার চিত্তের মধ্যে যদি প্ৰাণ থাকে। তবে তাই তুমি দান করতে এসো। ইত্যাদিদেবতার গ্রাস এই কবিতার গল্প অংশ সংক্ষিপ্ত ক’রে লেখো, কেবল রস দিয়ে লেখো। এর বর্ণনাগুলি। যেমনমৈত্ৰমহাশয় সাগরসংগমে যেতে প্ৰস্তুত হলে মোক্ষদা তার সহযাত্রাণী হবার জন্য মিনতি জানালে। বললে তার নাবালক ছেলেটিকে তার মাসির কাছে রেখে যাবে। ব্ৰাহ্মণ রাজী হলেন। মোক্ষদা ঘাটে এসে দেখে তার ছেলে রাখাল নীেকোতে এসে বসে আছে। টানাটানি ক'রে কিছুতেই তাকে ফেরাতে যখন পারলে না, তখন হঠাৎ রাগের মাথায় বললে, চল, তোকে সাগরে দিয়ে আসি। ব'লেই অনুতপ্ত হয়ে অপরাধ-মোচনের জন্যে নারায়ণকে স্মরণ করলে। মৈত্রমহাশয় চুপিচুপি বললেন, ছিছি। এমন কথা বলবার নয়। সাগরসংগমের মেলা শেষ হলো, যাত্রীদের ফেরবার পথে জোয়ারের আশায় ঘাটে নীেকো বাধা ; মাসির জন্য রাখালের মন ছটফট করছে। চারি দিকে জল, কেবল জল। চিকন কালো কুটিল নিষ্ঠুর জল, সাপের মতো ত্রুর খাল সে ছল-ভরা, ফেনাগুলি তার লোলুপ, লকলক করছে জিহবা, লক্ষ লক্ষ ঢেউয়ের ফণা তুলে সে ফুসে উঠছে, গর্জে উঠছে, লালায়িত মুখে মৃত্তিকার সন্তানদের কামনা করছে। কিন্তু আমাদেব স্নেহময়ী মাটি সে মূক, সে ধ্রুব, সে পুরাতন, শ্যামলা সে কোমল, সকল উপদ্রব সে সহ করে। যে কেউ যেখানেই থাকে তার অদৃশ্য বাহু নিয়ত তাকে টানছে আপনি দিগন্তবিস্তুত শান্ত বক্ষের দিকে ! ইত্যাদি। হতভাগ্যের গান হতভাগার দল গাচ্ছে যে, আমরা দূরদৃষ্টকে হেসে পরিহাস ক’রে যাব। সুখের স্ফীতবুকের ছায়াতলে আমাদের আশ্রয় নয়। আমরা সেই রিক্ত সেই সৰ্ব্বহারার দল, বিশ্বে যারা সর্বজয়ী, গর্কিত ভাগ্যদেবীর যারা ক্রীতদাস নয়। এমনি ক’রে বাকি অংশটা সম্পূৰ্ণ ক’রে দাও। বীরপুরুষ বালক তার মাকে ডাকাতের হাত থেকে রক্ষা করবার যে গল্প মনে মনে বানিয়ে তুলেছে সেটি রস দিয়ে ফলিয়ে লেখো। সরলা এই কবিতায় আপন শক্তিতে আপন ভাগ্যকে জয় করবার অধিকার পেতে চাচ্ছে নারী। দৈবের দিকে তাকিয়ে ক্লান্ত ধৈৰ্য নিয়ে সে পথপ্ৰান্তে জেগে থাকতে চায় না। নিজে চিনে নিতে চায় নিজের সার্থকতার পথ। সতেজে সে সন্ধানের রথ ছুটিয়ে দিতে চায় দুর্ধর্ষ অশ্বকে দৃঢ় বলগায় বেঁধে। সমস্ত