পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রাবণগাথা ১২৩ সভাকবি। মহারাজ, দেশকালপত্রের মধ্যে দেশও অসীম, কালও অসীম, কিন্তু আপনার পাত্রদের ধৈর্যের সীমা আছে। তোরণদ্বার থেকে চতুর্থ প্রহরের ঘণ্ট। বাজল, এখন সভাভঙ্গ করলে সেটা নিন্দনীয় হবে না। রাজ। কিন্তু তৎপূর্বে উষাসমাগমের একটা অভিনন্দন-গান হোক। নইলে ভদ্ররীতিবিরুদ্ধ হবে। যে-অস্তগমন নব অভূদিয়ের আশ্বাস না রেখেই যায় সে তে৷ প্ৰলয়সন্ধ্যা । নটরাজ। এ কথা সত্য । তবে এসে অরুণিক, জাগা ও প্রভাতের আগমনী । বিশ্ববেদাতে শ্রাবণের রসদানযজ্ঞ সমাধা হল। শ্রাবণ তার কমণ্ডলু নিঃশেষ করে দিয়ে বিদায়ের মুখে দাড়িয়েছে। শরতের প্রথম উষার স্পর্শমণি লেগেছে আকাশে | দেখে দেগে, শুকতার অঁাপি মেলি চায় প্রভাতের কিনারায় । ডাক দিয়েছে রে শিউলি ফুলেরে-— আয় আয় অণয় | ও যে কার লাগি জালে দীপ, কণর ললাটে পরায় টিপ, ও যে কার আগমনী গায়— আয় আয় আগয় । জাগে জাগে। সখী, কাহার আশায় আকাশ উঠিল পুলকি । মালতীর বনে বনে ঐ শোনে৷ ক্ষণে ক্ষণে কহিছে শিশিরবায়— অণয় অায় আয় | নটরাজ। মহারাজ, শরৎ দ্বারের কাছে এসে পৌচেছে, এইবার বিদায়গান। রসলোক থেকে আপনার সভাকবি মুক্তি পেলেন বস্তুলোকে । সভাকবি । অর্থাৎ, অপদার্থ থেকে পদার্থে। বাদলধারা হল সারা, বাজে বিদায়-সুর। গানের পালা শেষ করে দে, যাবি অনেক দূর।