পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

उिन नत्रौ । २५१ আবার অচিরার সেই কলমধুর কণ্ঠের হাসি, আমার মনে যেন দুনে। লয়ের ঝংকারে সেতার বাজিয়ে দিলে। বললে, “দাদুর কাছে পৃথিবীর সবাই ছেলেমানুষ, আর দাদু হচ্ছেন সকল ছেলেমানুষের আগরওয়াল৷ ” "অধ্যাপক বললেন, "আগরওয়ালা ? একট। নতুন শব্দ বাংলায় আমদানি করলে। কোথা থেকে জোটালে।” ■ “সেই যে তোমার ভালোবাসার মাড়োয়ারি ছাত্র, কুন্দনলাল আগরওয়াল ; আমাকে এনে দিত বোতলে করে আমের চাটনি ; আমি তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলুম, অগিরওয়াল কথাটার মানে কী। সে বলেছিল, পায়োনিয়র।” অধ্যাপক বললেন, “ডাক্তার সেনগুপ্ত, আপনার সঙ্গে আলাপ হল যদি, আমাদের ওখানে যেতে হৰে তো।” * * բ “কিছু বলতে হবে না, দাদু। যাবার জন্তে লাফালাফি করছেন। আমার কাছে শুনেছেন, দেশকালের একজোট তত্ত্ব নিয়ে তুমি ব্যাখ্যা করবে আইনস্টাইনের কাধে চ’ড়ে।” মনে মনে বললুম, সর্বনাশ। কী দুষ্ট মি। অধ্যাপক অত্যন্ত উৎসাহিত হয়ে বললেন, “আপনার বুঝি টাইম-স্পেস’-এর—” আমি ব্যস্ত হয়ে বলে উঠলুম, “কিছু বুঝি নে 'টাইম-স্পেস’-এর। আমাকে বোঝাতে গেলে আপনার সময় নষ্ট হবে মাত্র।” বৃদ্ধ ব্যগ্র হয়ে বলে উঠলেন, “সময় ! এখানে সময়ের অভাব কোথায়। আচ্ছা, এক কাজ করুন-না, আজকে নাহয় আমাদের ওখানে আহার করবেন, কী বলেন।” আমি লাফ দিয়ে বলতে যাচ্ছিলুম, এখখনি।’ ஆந்த অচিরা বলে উঠল, “দাদু, সাধে তোমাকে বলি ছেলেমানুষ। যখন-তখন নেমতন্ন করে তুমি আমাকে মুশকিলে ফেল। এই দণ্ডকারণ্যে ফিরপোর দোকান পাব কোথায়। ওঁরা বিলেতের ডিনার-খাইয়ে জাতের সর্বগ্রাসী মানুষ, কেন তোমার নাতনির বদনাম করবে। অন্তত ভেটকিমাছ আর ভেড়ার ব্যবস্থা করতে হবে তো।” “আচ্ছা, আচ্ছ, তা হলে কবে আপনার সুবিধে হবে বলুন।” “সুবিধে আমার কালই হতে পারবে। কিন্তু অচিরা দেবীকে বিপন্ন করতে চাই নে। ঘোর জঙ্কলে পাহাড়ে গুহাগহবরে আমাকে ভ্রমণে যেতে হয়। সঙ্গে রাখি থলে ভরে চি ড়ে, ছড়াকয়েক কলা, বিলিতি বেগুন, কাচা ছোলার শাক, চিনেবাদামও কখনও থাকে। আমি সঙ্গে নিয়ে আসব ফলারের আয়োজন, অচিরা দেবী দই দিয়ে স্বহস্তে মেখে আমাকে খাওয়াবেন, এতে যদি রাজ থাকেন তা হলে কোনো কথা থাকবে না।”