পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ls/۰ ब्रवैौटश-ब्रक्रमांबन्नैौلا সকলে মিলে কাড়াকড়ি, সেখানে যে-মানুষ বেগে জেতে মালেও তার জিত। তৃপ্তিহীন লোভের বাহন বিরামহীন বেগ। সমস্ত পশ্চিম মাতালের মতো টলমল করছে সেই লোভে । সেখানে বেগবৃদ্ধি ক্রুমে লাভের উপলক্ষ না হয়ে স্বয়ং লক্ষ্য হয়ে উঠছে। বেগেরই লোভ আজ জলে স্থলে আকাশে হিষ্টিরিয়ার চীৎকার করতে করতে ছুটে বেরোল । ২ কিন্তু প্রাণপদার্থ তো বাষ্প-বিদ্যুতের ভূতে তাড়া-করা লোহার এঞ্জিন নয়। তার একটি আপন ছন্দ আছে। সেই ছন্দে দুই-এক মাত্রা টান সয়, তার বেশি নয়। মিনিট কয়েক ডিগবাজি খেয়ে চলা সাধ্য হতে পারে কিন্তু দশ মিনিট যেতে-না-যেতে প্রমাণ হবে যে মানুষ বাইসিকেলের চাকা নয়, তার পদাতিকের চাল পদাবলীর ছন্দে । গানের লয় মিষ্টি লাগে যখন সে কানের সজীব ছন্দ মেনে চলে । তাকে ছন থেকে চৌছনে চড়ালে সে কলাদেহ ছেড়ে কৌশলদেহ নেবার জন্যই হাসফাস করতে থাকে। তাগিদ যদি আরো বাড়াও তা হলে রাগিণীটা পাগলা-গারদের সদর গেটের উপর মাথা ঠুকে মারা যাবে। সজীব চোখ তো ক্যামেরা নয়, ভালো করে দেখে নিতে সে সময় নেয় । ঘণ্টায় বিশ-পচিশ মাইল দৌড়ের দেখা তার পক্ষে কুয়াশা দেখা । একদা তীর্থযাত্রা বলে একটা সজীব পদার্থ আমাদের দেশে ছিল । ভ্রমণের পূর্ণস্বাদ নিয়ে সেটা সম্পন্ন হত। কলের গাড়ির আমলে তীর্থ রইল যাত্রা রইল না, ভ্রমণ নেই পৌছনো আছে, শিক্ষাটা বাদ দিয়ে পরীক্ষাটা পাস করা যাকে বলে । রেল-কোম্পানির কারখানায় কলে-ঠাস তীর্থযাত্রার ভিন্ন ভিন্ন দামের বটিক সাজানে, গিলে ফেললেই হল—কিন্তু হলই না যে সে-কথা বোঝবারও ফুরসত নেই। কালিদাসের যক্ষ যদি মেঘদূতকে বরখাস্ত করে দিয়ে এরোপ্লেন-দূতকে অলকায় পাঠাতেন তা হলে অমন ইসর্গভরা মন্দাক্রান্ত ছন্দ দু-চারটে । শ্লোক পার না হতেই অপঘাতে মরত। কলে-ঠাসা বিরহ তো আজ পর্যন্ত বাজারে নামেনি । মেঘদূতের শোকাবহ পরিণামে শোক করবে না এমনতরো বলবান