পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাজা ও রানী వbrసి ত্রিবেদী। ওইটে বলতে পারলুম না বাপু— ওইটে আমায় কেউ বুঝিয়ে বলে নি । "হরি হে । জয়সেন । ব্রাহ্মণ, তুমি বড়ো কঠিন স্থানে এসেছ, কথা গোপন কর তো বিপদে পড়রে । *. ত্রিবেদী। হে ভগবান ! হ্যা দেখো বাপু, তুমি রাগ ক’রে না, তোমার স্বভাবটা নিতান্ত যে মধুমত্ত মধুকরের মতো তা বোধ হচ্ছে না । জয়সেন । বেশি ব’কে না ঠাকুর, যথার্থ কারণ যা জান বলে ফেলো । ত্রিবেদী । বাস্থদেব ! সকল জিনিসেরই কি যথার্থ কারণ থাকে। যদি বা থাকে তো সকল লোকে কি টের পায় ? যারা গোপনে পরামর্শ করেছে তারাই জানে। মন্ত্রী জানে, দেবদত্ত জানে। তা বাপু, তুমি অধিক ভেবে না, বোধ করি সেখানে যাবামাত্রই যথার্থ কারণ অবিলম্বে টের পাবে। জয়সেন । মন্ত্রী তোমাকে আর কিছুই বলে নি ? ত্ৰিবেদী। নারায়ণ, নারায়ণ ! তোমার দিব্য, কিছু বলে নি । মন্ত্রী বললে, “ঠাকুর, যা বললুম তা ছাড়া একটি কথা ব’লো না । দেখো, তোমাকে যেন একটুও সন্দেহ না করে।” আমি বললুম, “হে রাম । সন্দেহ কেন করবে ? তবে বলা যায় না ! আমি তো সরলচিত্তে বলে যাব, যিনি সন্দগ্ধ হবেন তিনি হবেন ।” হরি হে তুমিই সত্য । জয়সেন । পুজো উপলক্ষে নিমন্ত্রণ, এ তো সামান্য কথা,— এতে সন্দেহ হবার কী কারণ থাকতে পারে ? ত্রিবেদী। তোমরা বড়োলোক, তোমাদের এইরকমই হয় । নইলে “ধর্মস্ত সুক্ষ্ম গতি” বলবে কেন ? যদি তোমাদের কেউ এসে বলে, “আয় তো রে পাষগু, তোর মুণ্ডুটা টান মেরে ছিড়ে ফেলি” আমনি তোমাদের উপলুব্ধ হয় যে, আর যাই হোক লোকটা প্রবঞ্চনা করছে না, মুণ্ডুটার উপরে বাস্তবিক তার নজর আছে বটে। কিন্তু যদি কেউ বলে, “এস তো বাপধন, আস্তে আস্তে তোমার পিঠে হাত বুলিয়ে দিই”, অমনি তোমাদের সন্দেহ হয়। যেন আস্ত মুণ্ডুটা ধরে টান মারার চেয়ে পিঠে হাত বুলিয়ে দেওয়া শক্ত কাজ। হে ভগবান, যদি রাজা স্পষ্ট করেই বলত— একবার হাতের কাছে এস তো, তোমাদের একেকটাকে ধরে রাজ্য থেকে নির্বসন করে পাঠাই— তাহলে এটা কখনও সন্দেহ করতে না যে, হয়তো বা রাজকন্যার সঙ্গে পরিণাম-বন্ধন করবার জন্যেই রাজা ডেকে থাকবেন । কিন্তু রাজা বলছেন নাকি, “হে বন্ধুসকল, রাজদ্বারে শ্মশানে চ যস্তিষ্ঠতি স বান্ধব, অতএব তোমরা পুজো উপলক্ষে এখানে § 9