রবীন্দ্র-রচনাবলী بي دهون থেকে তার লম্বা কুর্তি এবং আমাদের পাপের ভার স্বন্ধের উপর বহন করে বেড়াচ্ছিপ্রায়শ্চিত্তের পথ বন্ধ। মনে হচ্ছে একবার যে লোকটির কম্বল হরণ করেছিলুম একুর্তিটিও তার। সে বেচার বৃদ্ধ, শীতপীড়িত, যাতে পঙ্গু, আংলো-ইণ্ডিয়ান পুলিসঅধ্যক্ষ । পুলিসের কাজ করে মানবচরিত্রের প্রতি সহজেই তার বিশ্বাস শিথিল হয়ে এসেছে, তার পরে যখন কাল প্রত্যুষে ব্রিটিশ চ্যানেল পার হবার সময় তীব্র শীতবায়ু তার হৃতকুর্তি জীর্ণ দেহকে কম্পান্বিত করে তুলবে তখন সেই সঙ্গে মহন্তজাতির সাধুতার প্রতিও তার বিশ্বাস কম্পিত হতে থাকবে। | ৯ সেপ্টেম্বর। প্রাতঃকালে দ্বিতীয়বার বেশপরিবর্তন করবার সময় দেখা গেল জামার বন্ধুর একটি পোর্টম্যাণ্টো পাওয়া যাচ্ছে না। i. পুলিসে সংবাদ দিয়ে প্রাতঃকালে তিনজনে প্যারিসের পথে পদব্রজে বেরিয়ে পড়লুম। প্রকাও রাজপথ দোকান বাগান প্রাসাদ প্রস্তরমূর্তি ফোয়ারা লোকজন গাড়িঘোড়ার মধ্যে অনেক ঘুরে ঘুরে এক ভোজন-গৃহের বিরাট ফটিকশালার প্রাস্তটেবিলে বসে অল্প আহার করে এবং বিস্তর মূল্য দিয়ে ঈফেল স্তম্ভ দেখতে গেলেম । এই লৌহস্তম্ভ চারি পায়ের উপরে ভর দিয়ে এক বাগানের মাঝখানে দাড়িয়ে আছে । কলের দোলায় চড়ে এই স্তম্ভের চতুর্থ তলায় উঠে নিম্নে সমস্ত প্যারিসটাকে খুব একটা বড়ো ম্যাপের মতো প্রসারিত দেখতে পেলুম। বলা বাহুল্য, এমন করে একদিনে তাড়াতাড়ি চক্ষু দ্বারা বহির্ভাগ লেহন করে প্যারিসের রসাস্বাদন করা যায় না । এ যেন, ধনিগৃহের মেয়েদের মতো বদ্ধ পালকির মধ্যে থেকে গঙ্গাস্বান করার মতো—কেবল নিতাস্ত ভীরের কাছে একটা অংশে এক ডুবে যতখানি পাওয়া যায়। কেবল ইাপানিই সার। হোটেলে এসে দেখলুম পুলিসের সাহায্যে বন্ধুর পোর্টম্যাণ্টে ক্ষিরে এসেছে, কিন্তু এখনো সেই পরের হৃত কোর্তা সম্বন্ধে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে আছি . . ১০ সেপ্টেম্বর । লণ্ডন অভিমুখে চললুম। সন্ধ্যার সময় লগুনে পৌছে দুই-একটি হোটেল অন্বেষণ করে দেখা গেল স্থানাভাব। অবশেষে একটি ভদ্রপরিবারের মধ্যে আশ্রয় গ্রহণ করা গেল । l ১১ সেপ্টেম্বর । সকালবেলায় আমাদের পুরাতন বন্ধুদের সন্ধানে বাহির হওয়া গেল । p ነ প্রথমে লগুনের মধ্যে আমার সর্বাপেক্ষা পরিচিত বাড়ির দ্বারে গিয়ে আঘাত করা গেল। যে দাসী এসে দরজা খুলে দিলে তাকে চিনি নে । তাকে জিজ্ঞাসা করলুম আমার বন্ধু বাড়িতে আছেন কি না । সে বললে তিনি এ-বাড়িতে থাকেন না ।
