পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কড়ি ও কোমল দুয়ারেতে উকি মেরে ফিরে তো যায় না সে রে, শিহরি উঠে না আশঙ্কায়, ভাঙা পাষাণের বুকে খেলা করে কোন সুখে হেসে আসে, হেসে চলে যায় । কে গাথিয়া দেয় তৃণজাল । লতাগুলি লতাইয়া বাহুগুলি বিথাইয়া ঢেকে ফেলে বিদীর্ণ কঙ্কাল । বজদগ্ধ অতীতের নিরাশার অতিথের ঘোর স্তব্ধ সমাধি -আবাস, ফুল এসে, পাতা এসে কেড়ে নেয় হেসে হোসে, অন্ধকারে করে পরিহাস । এরা সব কোথা ছিল, কেই বা সংবাদ দিল, গৃহহারা আনন্দের দল বাসা বাধে করি কোলাহল । আনে হাসি, আনে গান, আনে রে নূতন প্ৰাণ, সঙ্গে করে আনে রবিকরাঅশোক শিশুর প্রায় এত হাসে এত গায়, কাদিতে দেয় না। অবসর । বিষাদ বিশালকায়া ফেলেছে আঁধার ছায়া, তারে এরা করে না তো ভয়চারি দিক হতে তারে ছোটো ছোটো হাসি মারে, অবশেষে করে পরাজয় । এই যে রে মরুস্থল, দাবিদগ্ধ ধরাতল, এইখানে ছিল ‘পুরাতন’— একদিন ছিল তার শ্যামল যৌবনভীর, ছিল তার দক্ষিণপবন । যদি রে সে চলে গেল, সঙ্গে যদি নিয়ে গোল গীত গান হাসি ফুল ফল— শুষ্ক স্মৃতি কেন মিছে রেখে তবে গেল পিছে, শুষ্ক শাখা শুষ্ক ফুলদল । সে কি চায় শুষ্ক বনে গাহিবে বিহঙ্গগণে আগে তারা গাহিত যেমন । আগেকার মতো করে মোহে তার নাম ধরে উচ্ছসিবে বসন্তপবন ? নহে নহে, সে কি হয় ! সংসার জীবনময়, নাহি হেথা মরণের স্থান । আয় রে, নূতন, আয়, সঙ্গে করে নিয়ে আয় তোর সুখ, তোর হাসি গান ।