পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কড়ি ও কোমল দুইটি আঙুলে ধরি তুলি দেয় গলে । দুটি বাহু বহি আনে হৃদয়ের ডালা, রেখে দিয়ে যায় যেন চরণের তলে । ছিড়ে না ছিড়ে না। দুটি বাহুর বন্ধন । চরণ দুখানি চরণ পড়ে ধরণীর গায়— দুখানি অলস রাঙা কোমল চরণ । শত লক্ষ কুসুমের পরশস্বপন । ঝরিয়া মিলিয়া গেছে দুটি রাঙা পায় । প্ৰভাতের প্রদোষের দুটি সূর্যলোক অস্ত গেছে যেন দুটি চরণছায়ায় । যৌবনসংগীত পথে যেতেছে ছড়ায়ে, নূপুর কাদিয়া মরে চরণ জড়ায়ে, নৃত্য সদা বাধা যেন মধুর মায়ায় । হােথা যে নিঠুর মাটি, শুষ্ক ধরাতল— এসো গো হৃদয়ে এসো, ঝুরিছে হেথায় লাজরক্ত লালসার রাঙা শতদল ৷ হৃদয়-আকাশ আমি ধরা দিয়েছি গো আকাশের পাখি, নয়নে দেখেছি তব নূতন আকাশ । দুখানি আঁখির পাতে কী রেখেছ ঢাকি, হাসিলে ফুটিয়া পড়ে উষার আভাস । হৃদয় উড়িতে চায় হােথায় একাকী আঁখিতারকার দেশে করিবারে বাস । ওই গগনেতে চেয়ে উঠিয়াছে ডাকি, হােথায় হারাতে চায় এ গীত-উচ্ছস । তোমার হৃদয়াকাশ অসীম বিজন—— বিমল নীলিমা তার শান্ত সুকুমার, যদি নিয়ে যাই ওই শূন্য হয়ে পার আমার দুখানি পাখা কনকবরন । হৃদয় চাতক হয়ে চাবে অশ্রদ্ধার, হৃদয়চকোর চাবে হাসির কিরণ ।