পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শু্যামলী ৯৫ বাশিওআলা “ওগো বঁাশিওআলা, বাজাও তোমার বঁাশি, শুনি আমার নূতন নাম” —এই বলে তোমাকে প্রথম চিঠি লিখেছি, মনে আছে তো ? আমি তোমার বাংলাদেশের মেয়ে । স্বষ্টিকর্তা পুরো সময় দেন নি আমাকে মানুষ করে গড়তে— রেখেছেন আধাআধি করে । অস্তরে বাহিরে মিল হয় নি সেকালে আর আজকের কালে, মিল হয় নি ব্যথায় আর বুদ্ধিতে, মিল হয় নি শক্তিতে আর ইচ্ছায় । আমাকে তুলে দেন নি এ যুগের পারানি নৌকোয়, চলা আটক করে ফেলে রেখেছেন কালস্রোতের ও পারে বালুডাঙায় । সেখান থেকে দেখি প্রখর আলোয় ঝাপসা দূরের জগং— বিনা কারণে কাঙাল মন অধীর হয়ে ওঠে, দুই হাত বাড়িয়ে দিই, নাগাল পাই নে কিছুই কোনো দিকে । বেলা তো কাটে না, বসে থাকি জোয়ার-জলের দিকে চেয়ে— ভেসে যায় মুক্তি-পারের খেয়া, ভেসে যায় ধনপতির ডিঙা, ভেসে যায় চলতি বেলার আলোছায়া।