পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$8ર রবীন্দ্র-রচনাবলী বিভা ৷ হতেও পারে মা হয়তো টের পেয়েছেন, কিন্তু অপমানটা পাছে ছড়িয়ে পড়ে, তাই চুপ করে গেলেন। উদয় । মা কখনো এত বড়ো সর্বনেশে কথাটা বাবাকে বলবেন না। বিভা । তা বলবেন না, কিন্তু কেমন করে বুঝব আর কেউ জেনেছে কি না। সুরমা । বিভা, ভয় পাস নে, নিশ্চয় কেউ টের পায় নি। পেলে এতক্ষণ আগুন দাউ দাউ করে জলে উঠত। উদয় । ব্যাপার তো কাল হয়ে গেছে ? বিভা। ই। উদয় । তা হলে আমি বলে দিচ্ছি ফাড়া কেটে গেছে। বিচার করতে মহারাজের এক মুহূর্ত বিলম্ব হয় না। খবর পেলে কালকের রাতটা কাটত না। তবু এক কাজ কর, বিভা তুই এখনই যা। রামচন্দ্রকে ৰল, এ বাড়ি থেকে চলে যেতে, যেন কিছুমাত্র বিলম্ব না করেন । বিভা। তুমি বলো-না দাদা, আমার কথা যদি না শোনেন। উদয় । না, আমি তাকে যেতে বললে সে অপমান বোধ করবে। [ বিভার প্রস্থান স্বরম। রাজা হলেই কি মানুষ নিজের খেয়াল ছাড়া আর কিছুই দেখতে পায় না ? " . উদয়। সামান্য একটা মেয়েলি ঠাট্টার হার-জিতের কথা এই যশোরের রাজবাড়িতে স্বপ্নেও ভাবতে পারে, এত বড়ো নির্বোধ ! এখানেও খেয়ালের রাজত্ব বটে, কিন্তু কতবড়ো সব খেয়াল--বিধির লিখনকে মুছে ফেলে রক্তের অক্ষরে নতুন লিখন বসিয়ে দেওয়ার খেয়াল । বসন্তরায়ের প্রবেশ উদয় । একি, দাদামশায় যে ! স্বপ্ন ? না মতিভ্ৰম ? বসন্ত — গান আজ তোমারে দেখতে এলেম অনেক দিনের পরে। ভয় কিছু নেই, স্বখে থাকে, অধিক ক্ষণ থাকব নাকো— এসেছি এক নিমেষের তরে ।