পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলাভাষা-পরিচয় ': 8२$ লেখে, যেমন : ‘হওয়া’র পরিবর্তে হবা’ । হ এবং অস্ত্যস্থ ব’এর সংযুক্ত বর্ণেও রসনা অস্ত্যস্থ ব'কে স্পর্শ করে, যেমন : আহবান জিহা । ... ." বাংলা বর্ণমালার সবপ্রান্তে একটি জবর্গকে স্থান *েহয়েছে, বর্ণনা করবার সময় তাকে বলা হয় : ক’এ মূর্ধন্ত ৰ ‘ক্ষিয়ে । কিন্তু তাতে না থাকে ক, না থাকে মূর্ধন্ত ব। শব্দের আরম্ভে সে হয় খ ; অন্তে মধ্যে দুটো থ’এ জোড়া ধ্বনি, যেমন "বক্ষ'। এই ক্ষ'র একটা বিশেষত্ব দেখা যায়, ইকারের পূর্বে সে একার গ্রহণ করে, যেমন : ক্ষেতি ক্ষেমি ক্ষেপি । তা ছাড়া আকার হয় Jাকার, যেমন "ক্ষ্যস্ত’ হয় ‘খ্যান্ডো’ ; কারও কারও মুখে ক্ষমা হয় ‘খাম’ । Hළු আমাদের শিক্ষার ক্ষেত্র যতই বেড়ে চলেছে ততই দেখতে পাচ্ছি, আমাদের চলতি ভাষার কারখানায় জোড়তোড়ের কৌশলগুলো অত্যন্ত দুর্বল। বিশেষাকে বিশেষণ বা ক্রিয়াপদে পরিণত করবার সহজ উপায় আমাদের ভাষায় নেই বললেই হয় । তাই বাংলা ভাষার আপন রীতিতে নতুন শৰ বানানো প্রায় অসাধ্য। সংস্কৃত ভাষায় কতকগুলো টুকরো শব্দ আছে যেগুলোর স্বতন্ত্র কাজ নেই, তারা বাক্যের লাইন বদলিয়ে দেয়। রেলের রাস্তায় যেমন সিগন্তাল, ভিন্ন দিকে ভিন্ন রঙের আলোয় তাদের ভিন্ন রকমের সংকেত, সংস্কৃত ব্যাকরণের উপসর্গগুলো শব্দের মাথায় চড়া সেইরকম লিগন্তাল । কোনোটাতে আছে নিষেধ, কোনোটা দেখায় এগোবার পথ, কোনোটা বাইরের পথ, কোনোটা নীচের দিকে, কোনোটা উপরের দিকে, কোনোটা চার দিকে, কোনোটা ডাকে ফিরে আসতে। গত শৰে অা উপসর্গ জুড়ে দিলে হয় ‘আগত', সেটা লক্ষ্য করার কাছের দিক ; নিৰ্ব জুড়ে দিলে হয় ‘নির্গত, দেখিয়ে দেয় বাইরের দিক ; অস্থ জুড়ে দিলে হয় ‘অমুগত, দেখিয়ে দেয় পিছনের দিক ; তেমনি ‘সংগত 'দুর্গত' "অপগত প্রভৃতি শৰে নানা দিকে তর্জনী চালানো । উপসর্গ থাকে সামনে, প্রত্যয় থাকে পিছনে । তারা আছে একই শব্দের নানা অর্থ বানাবার কাজে । নতুন শব্দ তৈরি করবার বেলায় তাদের নইলে চলে না। শব্দগড়নের কাজে বাংলাতেও কতকগুলো প্রত্যয় পাওয়া যায় । তার একটার ইষ্টান্ত জন, যার থেকে হয়েছে : চলন বলন গড়ন ভাঙন। এরই সহকারী জা প্রত্যয়, যার থেকে পাওয়া যায় বিশেষ পদে ; চল বলা গড়া ভাঙা । এই প্রত্যয়টা বাংলায় সবচেয়ে সাধারণ, প্রায় সব ক্রিয়াতেই এদের জোড়া যায়। এই আ প্রত্যয়