পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

જીર রবীন্দ্র-রচনাবলী পুপ। ফেল করবার বিত্র জেদ আরো অনেক ছেলের দেখেছি। মিভিরদের বাড়ির মোতিলাল আমার সঙ্গে একসঙ্গেই পড়া আরম্ভ করেছিল। ম্যাটকের এ পারের খোটা এমনি বিষম জেদ করে আঁকড়িয়ে রইল, ওর পিসেমশায় ওর কানে ধরে ঝি কে মারতে মারতে কান প্রায় ছিড়ে দিলেন কিন্তু পার করতে পারলেন না। চল ভাই হৈমি, পড়া করবি আয়— স্বামীর হয়ে পাস করার কাজটা তুই লেরে রাখবি চল । বিশ্বেশ্বর। যাও পড়তে, কিন্তু শোনো মা,— ফকির টাকা চাইলেই তুমি ওকে দাও কেন । হৈম। কী করব বাবা, টাকা টাকা করে উনি বড়ো অশাস্তি বাধান । বিশ্বেশ্বর। ঐ দেখো-না, একটা রোওয়া-ওঠা বাঘের চামড়ার উপর বলে বিড়বিড় করে বকছে । এই ফকির, শুনে ধা, বঁfদর । শুনে যা বলছি । পুপ। মেসোমশায়, তোমার বুঝি সাহল হয় না ওকে ওর গণ্ডিটা থেকে টেনে আনতে ! বিশ্বেশ্বর। সত্যি কথা বলি, মা, ভয়-ভয় করে। ওর সব মন্তর-তম্ভর ঠিক ষে মানি তাও নয়, আবার না মানবার মতো বুকের পাটাও নেই। দেখো-না, ওখানটায় কিরকম খুদে পাগলা-গারদ সাজিয়েছে। গুরু কবে পাঠ খেয়েছিল, তার মুড়োর খুলিটা রেখেছে পশমের আসনে । পুষ্প । ঐ জায়গাটাকে ও নাম দিয়েছে মোক্ষধাম । গুরুর সিগারেট-খাওয়া দেশলাই-কাঠিগুলো কাটা কাচকলার টুকরোর উপর পুতে পুতে গণ্ডি বানিয়েছে। ও বলে, কাঠিগুলোর আলো কিছুতেই নেবে না, যার দিব্যদৃষ্টি আছে সে চোখ বুজলেই দেখতে পায় । গুরুর একটা চা-সেটের ভাঙা পিরিচ এনেছে, লেটার প্রতিষ্ঠা হয়েছে গুরুর বর্ম চুরুটের প্যাক্‌বাক্সে । গুরু ভালোবাসেন সাড়ে আঠারো ভাজা, কিনে এনে নৈবেদ্য দেয় ঐ পিরিচ ভরে । বলে, ঐ পিরিচে যে পেয়াল ছিল এক কালে, তার অদৃপ্তরূপ গুরুর অদৃশু প্রসাদ ঢালতে পাকে । মোক্ষধাম ভরে যায় দাঞ্জিলিং চায়ের গন্ধে । বিশ্বেশ্বর। আচ্ছা মা, ঐ বড়ে বড়ো বোতলগুলো কী করতে সাজিয়ে রেখেছে ! ওর মধ্যে গুরুর ফৗভার-মিক্‌শ্চারের অদৃপ্তরূপ ভরে রেখেছে না কি ! পুপ । বলানা হৈমি, ওগুলো কিসের জন্তে । হৈম। দক্ষিণা পেলেই গুরু তালপাতার উপর গীতার গোক লিখে সেগুলো জল দিয়ে ধুয়ে দেন। গীতা-ধোওয়া জলে ঐ বোতলগুলো ভরা। তিন সদ্ধে স্নান করে