পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

& 8 রবীন্দ্র-রচনাবলী কোণের ঘরে— বাইরে যাওয়া মান । সেখানে চাকর পান সাজে, দেয়ালে মোছে হাত, গুন গুন ক’রে গায় মধুকানের গান ; শান-বাধানো মেজে, খড় খড়ে-দেওয়া জানলা । নীচে ঘাট-বাধানে পুকুর, পাচিল ঘেঁষে নারকেল গাছ । জটাধারী বুড়ে বট মোটা মোট শিকড়ে অঁাকড়ে ধরেছে পুব ধারটা । সকাল থেকে নাইতে আসে পাড়ার লোকে, বিকেলের পড়ন্ত রোদে ঝিকিমিকি জলে ভেসে বেড়ায় পাতিহাসগুলো, পাখা সাফ করে ঠোঁট দিয়ে মেজে | প্রহরের পর কাটে প্রহর । আকাশে ওড়ে চিল, থালা বাজিয়ে যায় পুরোনো কাপড়ওয়াল, বাধানে নালা দিয়ে গঙ্গার জল এসে পড়ে পুকুরে । পৃথিবীতে ছেলের যে খোলা জগতের যুবরাজ আমি সেখানে জন্মেছি গরিব হয়ে । শুধু কেবল تھا. আমার পেল ছিল মনের ক্ষুধায়, চোখের দেখায়, পুকুরের জলে, বটের শিকড়-জড়ানো ছায়ায়, নারকেলের দোদুল ডালে, দূর বাড়ির রোদ-পোহানো ছাদে । অশোকবনে এসেছিল হনুমান, সেদিন সীতা পেয়েছিলেন নবদুর্বাদলশ্যাম রামচন্দ্রের খবর। আমার হকুমান আসত বছরে বছরে আষাঢ় মাসে আকাশ কালো করে সজল নবনীল মেঘে । আনত তার মেদুর কণ্ঠে দূরের বার্তা, যে দুরের অধিকার থেকে আমি নির্বাসিত।