পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলা শব্দতত্ত্ব 88s দুৰ্দৈবক্রমে, তুমি বল নাচে যাও এমন মনে হতেও পারে- সেই কাচিৎ দুৰ্যোগ এড়াবার জন্যে etermal punishment কি দয়া কিংবা ন্যায়ের পরিচায়ক। ‘দেবতা নিশ্বাস ছাড়ি কহিলেন--” সমস্ত বাংলাদেশে যত পাঠশালায় যত ছেলে আছে পরীক্ষা করে দেখো একজনেরও ইলেকের দরকার হয় কি না, তবে কেন তুমি না-হক মুদ্রাকরকে পীড়িত করলে। তোমার প্রফে তুমি ক্ষুদে ক্ষুদে চিহ্নের বঁাকে আমার কাব্যকে এমনি আচ্ছন্ন করেছ যে তাদের জন্য মশারি ফেলতে ইচ্ছে হয়। আমার প্রফে আমি এর একটাও ব্যবহার করি নি- কেননা, জানি বুঝতে কানাকড়ি পরিমাণেও বাধে না। জানি আমার বইয়ে নানা বানানে চিহ্নপ্রয়োগের নানা বৈচিত্ৰ্য ঘটেছে- তা নিয়েও আমি মাথা বিকাই নে- যেখানে দেখি অর্থবোধে বিপত্তি ঘটে। সেখানে ছাড়া এইদিকে আমি দৃকপাতও করি নে। প্রফে যত অনাবশ্যক সংশোধন বাড়াবে ভুলের সম্ভাবনা ততই বাড়বে- সময় নষ্ট হবে, তার বদলে লাভ কিছুই হবে না। ততো যতো শব্দে ওকার নিতান্ত অসংগত। মতো সম্বন্ধে অন্য ব্যবস্থা। মোটের উপর আমার বক্তব্য এই-- পাঠককে গোড়াতে পাগল নির্বোধি কিংবা আহেলাবেলাতি বলে ধরে নিয়ো না- যেখানে তাদের ভুল করবার কোনো সম্ভাবনা নেই। সেখানে কেবলই তাদের চোখে আঙুল দিয়ে না- চাণক্যের মতো চিহ্নের কুশাঙ্কুরগুলো উৎপাটিত কোরো তা হলে বানানভীরু শিশুদের যিনি বিধাতা তাঁর আশীর্বাদ লাভ করবে । আমি যে নির্বিচারে চিহ্নসূয় যজ্ঞের জনমেজয়গিরি করতে বসেছি তা মনে কোরো না। কোনো কোনো স্থলে হাইফেন চিহ্নটার প্রয়োজন স্বীকার করি। অব্যয় ‘যে’ এবং সর্বনাম ‘যো’ শব্দের প্রয়োগভেদ বোঝাবার জন্যে আমি হাইফেনের শরণাপন্ন হই । ‘তুমি যে কাজে লেগেছ' বলতে বোঝায় তুমি অকৰ্মণ্য নও, এখানে 'যে’ অব্যয় । ‘তুমি যে কাজে লেগেছি। এখানে কাজকে নির্দিষ্ট করবার জন্য “যে সর্বনাম বিশেষণ। প্রথম ‘যে’ শব্দে হাইফেন দিয়ে তুমি’-র সঙ্গে ও দ্বিতীয় ‘যে’- কে কাজ’ শব্দের সঙ্গে যুক্ত করলে অর্থ স্পষ্ট হয়। অন্যত্র দেখো—“তিনি বললেন যে আপিসে যাও, সেখানে ডাক পড়েছে। এখানে যে অব্যয়। অথবা তিনি বললেন “যে আপিসে যাও সেখানে ডাক পড়েছে। এখানে ‘যে’ সর্বনাম, আপিসের বিশেষণ। হাইফেন চিহ্নে অর্থভেদ স্পষ্ট করা যায়। যথা, তিনি বললেন-যে আপিসে যাও, সেখানে ডাক পড়েছে।” এবং তিনি বললেন যে-আপিসে যাও সেখানে ডাক পড়েছে। ” Σς 8 Σ S পত্রিকায় । চণ্ডিদাসের যে নূতন পদাবলী প্রকাশিত হইতেছে তাহা বহুমূল্যবান।. সম্পাদক মহাশয় আদর্শ পুঁথির বানান সংশোধন করিয়া দেন নাই সেজন্য তিনি আমাদের ধন্যবাদভাজন। প্রাচীন গ্রন্থসকলের যে-সমস্ত মুদ্রিত সংস্করণ আজকাল বাহির হয় তাহাতে বানান-সংশোধকগণ ܚܢܢܝܣܩܦr ১. জীবনময় রায়কে লিখিত পত্রের পরিমার্জিত রূপ। R. সাহিত্য-পরিষৎ পত্রিকা, 8v006, डूटीम সংখ্যা । ܬܠlܠ ܬ