পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সংগীতচিন্তা هاوا আমার নিজের প্রথম প্রশ্ন হল এই : বৈশিষ্ট্য কিছু আছে কি না? বিশেষ বলতে আমি ব্যক্তির অতিরিক্তকে বিশ্বাস করতে চাই না। এমন কোন বস্তু আছে যার কৃপাতেই আমরা বাঙালি, যার প্রকাশ কি উন্মেষই হল বাংলা-পরিশীলনের ইতিহাস? আমার বিশ্বাস : ঐ প্রকার বস্তুর অস্তিত্ব নেই, যেটি আছে সেটি কেবল মনঃকল্পিত সুবিধাবাচক ধরতাই বুলি, মন্ত্র মাত্র। মন্ত্রেচিচ্চারণে সোয়াস্তি আছে, যাঁরা করেন তঁাদের- বাকি সকলের নির্যাতন। যে-কোনো ধর্মের ইতিহাসে তার ভুরি ভুরি প্রমাণ আছে। অর্থাৎ, আমি গণমন মানছি না। তাই বলে মহাজনতন্ত্রেও বিশ্বাসী হতে পারি না। স্বীকার করতে পারি না যে, বাংলার বৈশিষ্ট্য যদি থাকে। তবে সেটি এক কিংবা একাধিক অ-সাধারণ 3rfs - 3 3,42TCsö fra and above all, he was a Bengali aff, 9; 3rict ও পড়তে। যিনি যত বড়ো লোকই হােন-না কেন, তিনি একাই আমাদের সকল সংস্কার তৈরি করেছেন কিংবা তিনিই সর্ববিধ সংস্কারের প্রতীক, প্রতিভু, প্রতিনিধি—এ কথা বললে জাতিকে সমাজকে অপমান করা হয়। অপর পক্ষে, যে সাধারণ ব্যক্তি ভোট দিয়ে ও না দিয়েই নিজের অস্তিত্ব আবিষ্কার করে তার ব্যবহারই কি is equal to বাংলার বৈশিষ্ট্য ? মহাজন ও লোকজন উভয়েরই দান আছে, কিন্তু জাতির সংস্কার উভয়ের সমষ্টি ভিন্ন আরো কিছু। এই অতিরিক্ত অশরীরী বস্তুর গুণাবলীকেই বৈশিষ্ট্য বলা হয়। তার আবার শক্তি আছে, সে শক্তি আবার মহাজন লোকজনের সব প্রয়াসকে এক ছাঁচে ঢালতে পারে- এবং ঢালাই উচিত! অথাতো ভূদেবচন্দ্ৰস্য মুসোলিনীনাম শাসনতন্ত্রম। জাতিগত বৈশিষ্ট্য কিংবা মূলপ্রকৃতিকে কোনো বস্তুর, কোনাে স্থাণুসত্তার, কোনাে আচল সারাপদার্থের প্রত্যয়ও যদি না ভাবি, তাকে যদি সামাজিক গতি ও বিবর্তনের বিবরণ হিসেবেই বুঝি, তাকে পড়ে পাওয়ার বদলে অর্জন করাই যদি মানুষের স্বভাবের দায়িত্ব হয়, তবে ব্যাপারটা অপেক্ষাকৃত সহজ হয় নিশ্চয়। কিন্তু অন্য দিক থেকে আবার ঘোরালো হয়ে ওঠে। ঐভাবে দেখলে কোনো পরিশীলনেরই নিজের রূপ থাকে না, থাকে নব্যসংস্কৃতিরচনার গুরুভার, আবার সে গুরুভার পড়ে গিয়ে যে ব্যক্তিপুরুষ হতে চায় তারই স্কন্ধে। সংস্কৃতির স্বাধীন নিঃসম্পূক্ত সত্তা রইল কোথায়? কেবল কি তাই ? সংস্কৃতিকে কেবল গতি কিংবা বিবর্তন ভাবলে তার বিবৃতি কিংবা ইতিহাস লেখা ছাড়া আর-কিছুই লেখা চলে না। অর্থাৎ, সে সম্বন্ধে কোনো সুধীজনঅনুমোদিত সিদ্ধান্তে পৌছানো যায় না। আমারই ওপর যখন সংস্কৃতিকে গ্রহণ করবার ভার ও তাকে ভেঙে নতুন করে গড়বার দায়িত্ব পড়ল, তখন অন্যে সে ভার গ্রহণ করবে। কেন ? অন্যের ওপর চাপাতে আমি যাবই বা কেন? অতএব, তার সামাজিক শক্তি রইল না, এক কথায়, তার cifts trial rit, Qikhoi (Kai history of adaptation and adjustment, active or passive-নয় কি ? যদি কেউ ঐ বিবরণীতে কোনো রীতিনীতির আবিষ্কার করতে পারে তো বহুত আচ্ছা। সেটুকু তার কৃতিত্ব, সে তাই নিয়ে তার নিজের প্রভাব বিস্তার করুক। সে কাজে তার কেরামতি, তার বাহাদুরি। কিন্তু, আপনাকে নিশ্চয়ই মানতে হবে সে রীতি-নীতি কোনো সংস্কৃতিরই বৈশিষ্ট্য নয় ; আপনি বলতে পারেন না যে, সে রীতিনীতি সংস্কৃতির অন্তরাল থেকে গোপনে নিজের উদ্দেশ্যসাধন করে যাচ্ছে। উদ্দেশ্যটি আবার যা হচ্ছে তাই। তার বেশি জানিবার কোনো উপায়