পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্ৰন্থসমালোচনা V9Y Gt Studies in English" by W. Mc. Mordie, Translation and Retranslation by Gangadhor Banerjee, প্রভৃতি যে-সকল পুস্তক এস্ট্রোন্স পরীক্ষার্থী বালক মাত্রেই পড়িয়া থাকেন, বলা বাহুল্য যে এই পুস্তকগুলির সম্পূর্ণ সাহায্য গ্ৰহণ করিয়া এই পুস্তকখানি রচিত হইয়াছে। পুস্তকখানি পাঠে, লেখকের ভাষা শিক্ষা দিবার সুরুচি দেখিয়া আমরা সন্তুষ্ট হইয়াছি। হঁহার সহিত আমাদের অনেকগুলি মতের ঐক্য হইয়াছে, এবং সে মতগুলি সুরুচিসংগত জ্ঞান করি। আমাদিগের বিশ্বাস যে পুস্তকখানি পাঠে ব্যাকরণজ্ঞ বালকদিগের উপকার জমিতে পারে। verdì छाष्ट्र, यनि »२०5 লালা গোলোকচাঁদ। পারিবারিক নাটক। শ্ৰীসুরেন্দ্ৰচন্দ্র বসু। নাটকটি অসম্ভব আতিশয্যে পরিপূর্ণ। সমস্তটা একটা সামাজিক ভেলকির মতো। কতকগুলি অদ্ভুত ভালো লোক এবং অদ্ভুত মন্দ লোক একটা অদ্ভুত সমাজে যথেচ্ছা অদ্ভুত কাজ করিয়া যাইতেছে, মাথার উপরে একটা বুদ্ধিমান অভিভাবক কেহ নাই। স্থানে স্থানে লেখকের পারিবারিক চিত্ররচনায় ক্ষমতা প্রকাশ পাইয়াছে। তীর্থযাত্রাকালে বৃদ্ধ কর্তা-গিল্লির গৃহত্যাগের দৃশ্য গ্রন্থের মধ্যে সর্বোৎকৃষ্ট অংশ। দেহাত্মিক-তত্ত্ব। ডাক্তার সাহা প্রণীত। এই গ্রন্থে শ্ৰীদর্শন রাজচক্রবতী নামক একব্যক্তি গুরুর আসনে উপবিষ্ট। ভোলানাথ দাস নামক এক ব্যক্তি র্তাহার উপযুক্ত শিষ্য। উভয়ের মধ্যে কথোপকথন চলিতেছে। শুরুজি রূপকচ্ছলে জ্ঞানগর্ভ উপদেশ দিতেছেন- শিষ্য সেই উপদেশ শুনিয়া কৃতাৰ্থ হইতেছেন। দেহ-মন ও জগতের শক্তি সকলকে দেব-দেবী রূপে কল্পনা করিয়া জগৎ-ব্রহ্মবাদের ব্যাখ্যা করা হইয়াছে। “যোগাকৰ্ষণ-দেবা” “মাধ্যাকর্ষণ-দেব” “রসায়ন-দেবা” “মস্তিষ্কাদেবী”প্ৰভৃতি দেব-দেবীর অবতারণা করা হইয়াছে। গ্রন্থের সার মর্ম এই যে, ব্ৰহ্মা কতকটা দৈহিকভাবে ও কতকটা আত্মিকভাবে আত্মস্বরূপ প্ৰকাশ করিয়াছেন। এবং সকল ধর্মের মধ্যেই কতকটা দৈহিক ও কতকটা আত্মিক ভাব বিদ্যমান। উপদেশের কিঞ্চিৎ নমুনা নিম্নে দেওয়া যাইতেছে। “বলি, মস্তিষ্ক দেবি! আপনার কয়টি পুত্র ও কয়টি কন্যা আমায় বলিবেন কি?” “ভোলানাথ! তুমি কী নিমিত্ত এরূপ প্রশ্ন করিতেছ? তোমার সাধ্য নয় যে, তুমি এ সকল বুঝিতে পাের। এই দেখো, আমার জ্যেষ্ঠা কন্যা, ইহার নাম স্পর্শ সত্তা বা ত্বক, এই আমার দ্বিতীয় কন্যা, রসনা। এই আমার প্রথম পুত্র নয়ন, দ্বিতীয় পুত্র শ্রবণ, এই আমার তৃতীয় কন্যা নাসিক” ইত্যাদি। গ্রন্থের “দৈহিক ভাবটি” অতি পরিপাটি। গ্রন্থের আত্মিক ভাব বুঝিবার জন্য ভোলানাথের ন্যায় সমজদার ব্যক্তির আবশ্যক। যাহা হউক, আমাদের ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে এইটুকু বুঝিতে পারি, এই গ্ৰীষ্মপ্ৰধান দেশে “মস্তিষ্ক দেবী”কে বিবিধ শৈত্য-উপচারে ঠাণ্ডা রাখা কর্তব্য। וףאוף ফাল্গুন ১২৯৮ সংগ্ৰহ। শ্ৰীনগেন্দ্ৰনাথ গুপ্ত। গ্ৰন্থখানি ছোটাে ছোটাে গল্পের সমষ্টি। ইহার অধিকাংশ গল্পই সুপাঠ্য। কিন্তু আমাদের বিবেচনায় ইহাই লেখকের পক্ষে যথেষ্ট প্রশংসার বিষয় নহে। যিনি “শ্যামার কাহিনী” লিখিতে পারেন তাহার নিকট হইতে কেবলমাত্র কৌতুহল অথবা বিস্ময়জনক গল্প আমরা প্রত্যাশা করি না। “শ্যামার কাহিনী" গল্পটি আদ্যোপােন্ত জীবন্ত এবং মূর্তিমান,ইহার কোথাও বিচ্ছেদ নাই। অন্য গল্পগুলিতে লেখকের নৈপুণ্য থাকিতে পারে। কিন্তু এই গল্পেই তাহার প্রতিভার পরিচয় পাওয়া যায়।