পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কবিতা কেমনে সখি গো তাহা বুঝাইব কহিয়া? ব্যথায় পাইয়া ব্যথা, যদি গো শুধাতে কথা অশ্রুজলে মিশাইতে যদি অশ্রদ্ৰুজল আদরে মেহের স্বরে, একটি কহিতে কথা, অনেক নিভিত তবু এ হৃদি-অনল জানিতাম ওগো সখি, কঁদিলে মমতা পাব, কাদিলে বিরক্ত হবে। এ কী নিদারুণ ? চরণে ধরি গো সখি, একটু করিয়ো দয়া নহিলে নিভিবে কিসে বুকের আগুন! উপহার-গীতি ছেলেবেলা হতে বালা, যত গাঁথিয়াছি মালা যত বনফুল আমি তুলেছি যতনে ছুটিয়া তোমারি কোলে, ধরিয়া তোমারি গলে পর্যায়ে দিয়াছি সখি তোমারি চরণে। আজো গাঁথিয়াছি মালা, তুলিয়া বনের ফুল তোমারি চরণে সখি দিব গো পর্যায়েনা-হয়। ঘূণার ভরে, দলিয়ো চরণতলে হৃদয় যেমন করে দলেছ দুপায়ে। পৃথিবীর নিন্দাযশে, কটাক্ষ করি না বালা তুমি যদি সোহাগেতে করাহ গ্ৰহণ আমার সর্বস্বাধন, কবিতার মালাগুলি পৃথিবীর তরে আমি করি নি গ্রন্থন। আমি যে-সকল গান গাই গো মনের সুখে সপ্তসুরে পূর্ণ করি এ শূন্য আকাশ পৃথিবীর আর কেহ, শুনুক বা না শুনুক তুমি যেন শুন বালা, এই অভিলাষ! তোমার লাগিবে ভালো, তুমি গো বলিবে ভালো, গলাবে তোমারি মন এ সংগীত ’ধবনি আর কেহ না বুঝুকি খেদ নাহি গণি একদিন মনে পড়ে, যাহা তাহা গাইতাম সকলি তোমার সখি লাগিত গো ভালো নীরবে শুনিতে তুমি, সমুখে বহিত নদী "xt মাথায় ঢালিত চাদ পূর্ণিমার আলো। ” সুখের স্বপনসম, সেদিন গেল গো চলি অভাগা অদৃষ্টে হয় এ জন্মের তরে স্পর্শও করে না। আজ তোমার অন্তরে। ᎤᎨᏔᏱ