পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

og • রবীন্দ্র-রচনাবলী গভীর আননক্ষণ কতদিন তব মঞ্জরীতে একান্ত মিশিয়াছিল একখানি অখণ্ড সংগীতে আলোকে আলাপে হাস্তে, বনের চঞ্চল আন্দোলনে, বাতাসের উদাস নিশ্বাসে — এমন অবিমিশ্রশ্ৰদ্ধা, অবিচলিত অকৃত্রিম প্রতি, এমন সর্বভারবাহী সর্বত্যাগী সৌহার্দ্য জীবনে কত যে দুর্লভ ত৷ এই সত্তর বৎসরের অভিজ্ঞতায় জেনেছি। তাই সেই আমার কিশোর বন্ধুর অকাল তিরোভাবের বেদন আজ পর্যস্ত কিছুতেই ভুলতে পারি নি। এই আশ্রমবিদ্যালয়ের স্থদুর আরম্ভ-কালের প্রথম সংকল্পন, তার দুঃখ তার আনন্ম তার অভাব তার পূর্ণতা, তার প্রিয় সঙ্গ, প্রিয় বিচ্ছেদ, নিষ্ঠুর বিরুদ্ধতা ও অযাচিত আহুকূল্যের অল্পই কিছু আভাস দিলেম এই লেখায়। তার পরে শুধু আমাদের ইচ্ছ। নয়, কালের ধর্ম কাজ করছে ; এনেছে কত পরিবর্তন, কত নতুন আশা ও ব্যর্থতা, কত স্বহৃদের অভাবনীয় আত্মনিবেদন, কত অজানা লোকের অহৈতুক শক্রতা, কত মিখ্যা নিন্দ ও প্রশংসা, কত দুঃসাধ্য সমস্তা— আর্থিক ও পারমাথিক ! পারিতোষিক পাই বা না পাই, নিজের ক্ষতি করেছি সাধ্যের শেষ সীমা পর্যন্ত– অবশেষে ক্লাস্ত দেহ ও জীর্ণ স্বাস্থ্য নিয়ে আমারও বিদায় নেবার দিন এল— প্রণাম করে ঘাই তাকে ধিনি স্বদীর্ঘ কঠোর দুর্গম পথে আমাকে এতকাল চালনা করে নিয়ে এসেছেন। এই এতকালের সাধনার বিফলতা প্রকাশ পায় বাইরে, এর সার্থকতার সম্পূর্ণ প্রমাণ থেকে যায় অলিখিত ইতিহাসের অদৃশু অক্ষরে। আশ্বিন ১৩৪ •