পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

विश्वछांब्रडौ లిస్క్రి) রয়েছে। কিন্তু লোকে তো এ কথা বলতে পারে যে, আমাদের এ-সব ভালো লাগে না, বিদেশ থেকে কেন এ-সব অধ্যাপকদের জানানো ; ভারতবর্ষ তে আপনার পরিধির মধ্যেই বেশ ছিল । র্যারা এ কথা বলেন তাদের সঙ্গেও আমাদের কোনো বাদপ্রতিবাদ নেই। তারা এই প্রতিকূলতা সত্ত্বেও কলকাতার এই বিশ্বভারতী সন্মিলনী'র সভ্য হতে পারেন, তাতে কারে আপত্তি নেই। যদি আমরা কিছু গান সংগ্রহ করে আনি তবে তারা যে তা শুনবেন না এমন কোনো কথা নেই, কিম্বা আমাদের যদি কিছু বলবার থাকে তবে তাও তারা শুনতে আসতে পারেন— এই যেমন ক্ষিতিমোহনবাৰু সেদিন কবীর সম্বন্ধে বললেন, বা জাজ ষে আচার্য লেভির বিদায়ের পূর্বে তাকে সংবর্ধন করা হল। এই পণ্ডিত বিদেশী হলেও তো একে বিশেষ কোনো দেশের লোক বলা চলে না— ইনি আমাদের আপনার লোক হয়ে গেছেন, আমাদের দেশকে গভীরভাবে হৃদয়ে গ্রহণ করেছেন। এর সঙ্গে যে পরিচয়সাধন হল এতে করে তো কেউ কোনো জাঘাত পান নি । বর্তমান যুগে ইতিহাস হঠাৎ যেন নতুন দিকে বাক নেবার চেষ্টা করছে। কেন। আপনার জাতির একান্ত উৎকর্ষের জন্ত যারা নিয়ত চেষ্টা করছে হঠাৎ তাদের মধ্যে মূষলপর্ব কেন দেখা দিলে। পূর্বে বলেছি, মানুষের সত্য হচ্ছে, আপনাকে অনেকের মধ্যে লাভ করলে তবেই সে আপনাকে লাভ করে। এতদিন ছোটো সীমার মধ্যে এই সত্য কাজ করছিল। ভৌগোলিক বেষ্টন যতদিন পর্যস্ত সত্য ছিল ততদিন সেই বেষ্টনের মধ্যে প্রত্যেক ব্যক্তি আপনার জাতির সকলের সঙ্গে মিলনে নিজেকে সত্য বলে অনুভব করার দ্বারা বড়ো হয়েছে। কিন্তু বর্তমান যুগে সে বেড়া ভেঙে গেছে ; জলে স্থলে দেশে দেশে যে-সকল বাধা মানুষকে বাহির থেকে বিভক্ত করেছিল সে-সব ক্রমশ অপসারিত হচ্ছে। আজ আকাশপথে পর্যস্ত মানুষ চলাচল করছে। আকাশযানের উৎকর্ষ ক্রমে ঘটবে, তখন পৃথিবীর সমস্ত স্কুল বাধা মানুষ ডিঙিয়ে চলে যাবে, দেশগত সীমানার কোনো অর্থ ই থাকবে না। ভূগোলের সীমা ক্ষীণ হয়ে মাচুষ পরস্পরের কাছে এসে দাড়িয়েছে। কিন্তু এতবড়ো সত্যটা আজও বাহিরের সত্য হয়েই রইল, মনের ভিতরে এ সত্য স্থান পেলে না । পুরাতন যুগের অভ্যাস আজও তাকে জড়িয়ে আছে, সে যে সাধনার পাথেয় নিয়ে পথে চলতে চায় তা অতীত যুগের জিনিস ; স্থতরাং তা বর্তমান যুগের সামনের পথে চলবার প্রতিকূলতা করতে থাকবে। বর্তমান যুগে যে সত্যের আবির্ভাব হয়েছে তার কাছে সত্যভাবে না গেলে মার খেতে হবে। তাই আজ মারামারি বেধেছে— নানা জাতির মিলনের ক্ষেত্রেও আনন্দ