পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 е е রবীন্দ্র-রচনাবলী আশ্রমজননীর জন্ত ভিক্ষা করতে বাহির হয়েছি। শ্রদ্ধয়া দেয়ম্। সেই শ্রদ্ধার দানের দ্বারা আশ্রমকে সকলে গ্রহণ করবেন, সকলের সামগ্রী করবেন, তাকে বিশ্বলোকে উত্তীর্ণ করবেন। এই বিশ্বলোকেই অমৃতলোক। যা-কিছু আমাদের অভিমানের গণ্ডির, আমাদের স্বার্থের গণ্ডির মধ্যে থাকে তাই মৃত্যুর অধিকারবর্তী। বা সকল মানুষের ভাই সকল কালের। সকলের ভিক্ষার মধ্য দিয়ে আমাদের আগ্রমের উপরে বিধাতার অমৃত বধিত হোক, সেই অমৃত-অভিষেকে আমরা, তার সেবকেরা, পবিত্র হই, আমাদের অহংকার ধৌত হোক, আমাদের শক্তি প্রবল ও নির্মল হোক— এই কামনা মনে নিয়ে সকলের কাছে এসেছি ; সকলের মধ্য দিয়ে বিধাতা আমাদের উপর প্রসন্ন হোন, আমাদের বাক্য মন ও চেষ্টাকে তার কল্যাণস্থষ্টির মধ্যে দক্ষিণ হন্তে গ্রহণ করুন। জ্যৈষ্ঠ ১৩৩৩ S8 বহুকাল আগে নদীতীরে সাহিত্যচর্চ থেকে জানি নে কী আহানে এই প্রাস্তা এসেছিলেম। তার পর ত্রিশ বৎসর অতীত হয়ে গেল। আয়ুর প্রতি আর অধিক দাবি আছে বলে মনে করি নে। হয়তো আগামী কালে আর কিছু বলবার অবকাশ পাব না। অন্তরের কথা আজ তাই বলবার ইচ্ছা করি। উদ্যোগের যখন আরম্ভ হয়, কেন হয় তা বলা যায় না। বীজ থেকে গাছ কেন হয় কে জানে। দুয়ের মধ্যে কোনো সাদৃপ্ত নেই। প্রাণের ভিতর যখন জাহান আসে তখন তার চরম অর্থ কেউ জানে না। দু:সময়ে এখানে এসেছি, দুঃখের মধ্যে দৈন্তের মধ্যে দিয়ে মৃত্যুশোক বহন করে দীর্ঘকাল চলেছি— কেন তা ভেবে পাই নে। ভালো করে বলতে পারি নে কিসের টানে এই শূন্য প্রাস্তরের মধ্যে এসেছিলেম। মানুষ আপনাকে বিশুদ্ধভাবে আবিষ্কার করে এমন কর্মের ৰোগে যার সঙ্গে সাংসারিক দেনাপাওনার হিসাব নেই। নিজেকে নিজের বাইরে উৎসর্গ করে দিয়ে তবে আমরা আপনাকে পাই। বোধ করি সেই ইচ্ছেই ছিল, তাই সেদিন লহল৷ আমার প্রকৃতিগত চিরাভ্যস্ত রচনাকার্য থেকে অনেক পরিমাণে ছুটি নিয়েছিলুম। সেদিন আমার সংকল্প ছিল, বালকদের এমন শিক্ষা দেব বা শুধু পুথির শিক্ষা নয় ; প্রাস্তরযুক্ত অবারিত জাকাশের মধ্যে যে মুক্তির আনন্দ তারই সঙ্গে মিলিয়ে যতটা