পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিশ্বভারতী 8 eవి হবে, তার দ্বারা সত্যের দেহ-মুক্তি হবে, কিন্তু তার পরে নবজন্মে তার নবদেহ-ধারণের আহবান জাসবে এই কথা মনে রেখে— নাভিনন্দেত মরণং নাভিনন্দেত জীবিতম্। কালমেব প্রতীক্ষেত নির্দেশং ভূতকে যথা । ৯ পৌষ ১৩৩৯ জানুয়ারি ১৯৩৩ শাস্তিনিকেতন ᎼᏬ প্রৌঢ় বয়সে একদা যখন এই বিদ্যায়তনের প্রতিষ্ঠা করেছিলেম তখন আমার সম্মুখে ভাসছিল ভবিষ্যৎ, পথ তখন লক্ষ্যের অভিমূখে, অনাগতের আহবান তখন ধ্বনিত— তার ভাবরূপ তখনো অস্পষ্ট, অথচ এক দিক দিয়ে তা এখনকার চেয়ে অধিকতর পরিস্ফুট ছিল। কারণ তখন যে আদর্শ মনে ছিল তা বাস্তবের অভিমুখে আপন অখণ্ড আনন্দ নিয়ে অগ্রসর হয়েছিল। আজ আমার আয়ুষ্কাল শেষপ্রায়, পথের অন্ত প্রাস্তে পৌছিয়ে পথের আরম্ভসীমা দেখবার স্বযোগ হয়েছে, আমি সেই দিকে গিয়েছি— যেমনতর স্বর্ধ যখন পশ্চিম-অভিমুখে অস্তাচলের তটদেশে তখন তার সামনে থাকে উদয়দিগন্ত, যেখানে তার প্রথম যাত্রারম্ভ । অতীত কাল সম্বন্ধে আমরা যখন বলি তখন আমাদের হৃদয়ের পূর্বরাগ অত্যুক্তি করে, এমন বিশ্বাস লোকের আছে। এর মধ্যে কিছু সত্য আছে, কিন্তু সম্পূর্ণ সত্য নেই। যে দূরবর্তী কালের কথা আমরা স্মরণ করি তার থেকে বা-কিছু অবাস্তুর তা তখন স্বতই মন থেকে ঝরে পড়েছে। বর্তমান কালের সঙ্গে যত-কিছু আকস্মিক, বা-কিছু অসংগত সংযুক্ত থাকে তা তখন জ্বলিত হয়ে ধূলিবিলীন ; পূর্বে নানা কারণে যার রূপ ছিল বাধাগ্রস্ত তার সেই বাধার কঠোরতা আজ আর পীড়া দেয় না। এইজন্ত গতকালের ষে চিত্ৰ মনের মধ্যে প্রকাশ পায় তা স্বসম্পূর্ণ, ধাত্রারম্ভের সমস্ত উৎসাহ প্ৰতিপটে তখন ঘনীভূত। তার মধ্যে এমন অংশ থাকে না বা প্রতিবাদরূপে অন্ত অংশকে খণ্ডিত করতে থাকে। এইজন্তই অতীত স্মৃতিকে আমরা নিবিড়ভাবে মনে অনুভব করে থাকি। কালের দূরত্বে, যা যথার্থ সত্য তার বাহরূপের অসম্পূর্ণত ঘুচে যায়, সাধনার কন্নমূতি জঞ্ছন্ন হয়ে দেখা দেয়। প্রথম যখন এই বিদ্যালয় জারভ হয়েছিল তখন, এর আয়োজন কত সামান্ত ছিল,