পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

३६ो এত এ অসাধ্য কাজ । হৃত রাজকোষ, বিনা কারো প্রাণপাতে নৃপতির রোষ শান্তি মানিবে না। ধরি প্রহরীর হাত কাতরে কহিল তামা, শুধু দুটি রাত বন্দীরে বাচায়ে রেথো এ মিনতি করি।’ ‘রাখিব তোমার কথা কহিল প্রহরী । দ্বিতীয় রাত্রির শেষে খুলি বন্দীশাল রমণী পশিল কক্ষে, হাতে দীপ জ্বালা, লোহার শৃঙ্খলে বাধা যেথা বজ্ৰসেন— মৃত্যুর প্রভাত চেয়ে মৌনী জপিছেন ইষ্টনাম । রমণীর কটাক্ষ-ইঙ্গিতে রক্ষী আসি খুলি দিল শৃঙ্খল চকিতে । বিস্ময়বিহবল নেত্রে বন্দী নিরখিল সেই শুভ্ৰ স্থকোমল কমল-উন্মীল অপরূপ মুখ কহিল গদগদম্বরে, “বিকারের বিভীষিকা-রজনীর পরে করধৃতশুকতারা শুভ্র উষা-সম কে তুমি উদিলে আসি কারাকক্ষে মম— মুমূর্ধর প্রাণরূপা, মুক্তিরূপ অয়ি, নিষ্ঠুর নগরী-মাঝে লক্ষ্মী দয়াময়ী ? ‘আমি দয়াময়ী !’ রমণীর উচ্চহাসে চকিতে উঠিল জাগি নব ভয়ত্রাসে ভয়ংকর কারাগার । হাসিতে হাসিতে উন্মত্ত উৎকট হাস্য শোকাশুরাশিতে শতধা পড়িল ভাঙি । কঁাদিয়া কহিলা, এ পুরীর পথমাঝে যত আছে শিল৷ কঠিন শু্যামার মতে কেহ নাহি আর ? এত বলি দৃঢ়বলে ধরি হস্ত তার বজ্রসেনে লয়ে গেল কারার বাহিরে ।