পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(S S8& দাদাঠাকুর। আমাদের রাজার আদেশ আছে ওদের পাপ যখন প্রাচীরের আকার ধরে আকাশের জ্যোতি আচ্ছন্ন করতে উঠবে তখন সেই প্রাচীর ধুলোয় লুটিয়ে দিতে হবে। প্রথম যুনিক । দেব ধুলোয় লুটিয়ে । সকলে । দেব লুটিয়ে । দাদাঠাকুর। ওদের সেই ভাঙা প্রাচীরের উপর দিয়ে রাজপথ তৈরি করে দেব। সকলে । হা, রাজপথ তৈরি করে দেব । দাদাঠাকুর । আমাদের রাজার বিজয়রথ তার উপর দিয়ে চলবে। সকলে । ইয়া, চলবে, চলবে । পঞ্চক । দাদাঠাকুর, এ কী ব্যাপার ? প্রথম যুনক। চলো, পঞ্চক, তুমি চলো। দাদাঠাকুর । না না, পঞ্চক না। যাও ভাই, তুমি তোমার অচলায়তনে ফিরে যাও । যখন সময় হবে দেখা হবে । পঞ্চক। কী জানি ঠাকুর, যদিও আমি কোনো কর্মের না, তবুও ইচ্ছে করছে তোমাদের সঙ্গে ছুটে বেরিয়ে পড়ি । দাদাঠাকুর । না পঞ্চক, তোমার গুরু আসবেন, তুমি অপেক্ষা করো গে। [প্ৰস্থান \S) দর্ভকপল্পী পঞ্চক ও দর্ভকদল পঞ্চক । নির্বাসন, আমার নির্বাসন রে ! বেঁচে গেছি, বেঁচে গেছি!! প্রথম দৰ্ভক। তোমাদের কী খেতে দেব ঠাকুর ? পঞ্চক । তোদের যা আছে তাই আমরা খাব ৷ দ্বিতীয় দৰ্ভক । আমাদের খাবার ? সে কি হয় ? সে যে সব ছোওয়া হয়ে গেছে । পঞ্চক । সেজন্য ভাবিস নে ভাই । পেটের খিদে যে আগুন, সে কারও ছোয়া মানে না, সবই পবিত্র করে। ওরে, তোরা সকালবেলায় করিস কী বল তো । ষড়ক্ষরিত দিয়ে একবার ঘটশুদ্ধি করে নিবি (r. 2 তৃতীয় দৰ্ভক । ঠাকুর, আমরা নীচ দৰ্ভক জাত— আমরা ও-সব কিছুই জানি নে। আজ কত পুরুষ ধরে এখানে বাস করে আসছি, কোনোদিন তো তোমাদের পায়ের ধুলো পড়ে নি। আজ তোমাদের মন্ত্র পড়ে আমাদের বাপ-পিতামহকে উদ্ধার করে দাও ঠাকুর । পঞ্চক । সর্বনাশ ! বলিস কী ? এখানেও মন্ত্র পড়তে হবে !! তা হলে নির্বাসনের দরকার কী ছিল ? তা, সকালবেলা তোরা কী করিস বল তো ? প্রথম দৰ্ভক । আমরা শাস্ত্ৰ জানি নে, আমরা নাম গান করি । পঞ্চক । সে কী রকম ব্যাপার ? শোনা দেখি একটা । দ্বিতীয় দৰ্ভক । ঠাকুর, সে তুমি শুনে হাসবে।