পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/১৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

勒 भाथबौकष्कण ছিলেন না, তিনি নিঃশব্দে অন্ধকারে বিচরণ করিতেছিলেন। অনেকক্ষণ পর আবার বীরনগরের দিকে চাহিয়া দেখিলেন, ঘোর অন্ধকারে আর সে গ্রহ দেখা যায় না, নরেন্দ্র একটী দীঘনিশ্বাস পরিত্যাগ করিয়া ফিরিলেন। সম্মুখে যে পথ পাইলেন সেই দিকে চলিলেন। কোথায় যাইতেছেন, নরেন্দ্র জানেন না। উপরে অসীম গগন, নীচে অসীম প্রাস্তর, নরেন্দ্রের চিন্তাও অসীম ও অনন্ত, নরেন্দ্র যে দিক পাইলেন চলিলেন। পথপাশ্বে বটবৃক্ষ হইতে নিশাচর পক্ষী নরেন্দ্রকে দেখিয়া কুলায় ছাড়িয়া পলায়ন করিল, নিশাবিহারী শৃগালপাল নরেন্দ্রকে দেখিয়া চীৎকার করিতে লাগিল, নরেন্দ্র তাহা গ্রাহ্য করিলেন না। অনেক যাইয়া একটী গ্রামে আসিলেন। গ্রাম নিস্তব্ধ, সকলেই সপ্ত। কৃষ্ণবর্ণ বক্ষশ্রেণীর নীচে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কুটীর দেখা যাইতেছে, ও ব্যক্ষপত্র মধ্যে কোন কোন স্থানে খদ্যোতমালা ঝিকমিক করিতেছে। নরেন্দ্রকে দেখিয়া গ্রাম্য কুকুর শব্দ করিতে লাগিল, দই একজন গৃহস্থ ঘরের দ্বার খালিয়া চাহিয়া দেখিল, নরেন্দ্র কোন দিকে চাহিলেন না, পথ অতিবাহন করিতে লাগিলেন। গ্রামের পথ ঠিক জানেন না, স্থানে স্থানে বক্ষের নীচে ও ঝোপের ভিতর দিয়া যাইতে নরেন্দ্রের শরীর ক্ষতবিক্ষত হইল। নরেন্দ্র গ্রাহ্য করিলেন না, কতক্ষণে গ্রাম পার হইয়া আবার এক প্রাস্তরে পড়িলেন। . আবার প্রাস্তর পার হইলেন, অন্য গ্রামে পড়িলেন, আবার নিঃশব্দে গ্রাম পার হইয়া গেলেন। সেই রজনীযোগে কত গ্রাম অতিক্রম করিলেন, কতদরে যাইলেন, জানি না, নরেন্দ্রও বলিতে পারেন না । সমস্ত রজনী ভ্রমণ করিয়া নরেন্দ্রনাথ দরে প্রান্তরে একটী আলোক দেখিতে পাইলেন, সেই আলোক অনুসরণ করিয়া চলিতে লাগিলেন । প্রায় এক ক্রোশ যাইয়া আলোকের নিকট পেপছিয়া দেখিলেন, কতকগুলি লোক একটী শব দাহ করিতেছে। নরেন্দ্রনাথ তখন একবার দাঁড়াইলেন, শব দেখিয়া একবার দাঁড়াইলেন, কাঠের অগ্নি এক একবার জনলিয়া উঠিতেছিল, আবার মধ্যে মধ্যে নিস্তেজ হইয়া যাইতেছিল। ঐরপে স্তিমিত আলোকে নরেন্দ্রের আকৃতি ও বিকট মুখমন্ডল এক একবার দেখা যাইতে লাগিল। যাহারা শব দাহ করিতে আসিয়াছিল, তাহারা নরেন্দ্রকে দেখিতে পাইল। শ্রাস্ত পথিক মনে করিয়া নিকটে আসিতে বলিল, নরেন্দ্র নিকটে গেলেন না। পরিচয় জিজ্ঞাসা করিল, নরেন্দ্র পরিচয় দিলেন না শবদাহিগণ ক্ষণেক নরেন্দ্রের অচল দীঘ* অবয়ব ও বিকৃত মুখমণ্ডলের দিকে দটিপাত করিয়া শব ছাড়িয়া উদ্ধত্ব"শ্বাসে পলায়ন করিল। প্রত্যুষে গ্রামের সত্ৰীলোকেরা কলস লইয়া ঘাটে যাইতেছিল, এক দীঘর্ণকার গৌরবণ, বিকৃত মনুষ্য মত্তি পথে শয়ান দেখিয়া সভয়ে পাশ কাটিয়া চলিয়া গেল। প্রাতঃকাল হইল। গ্রামের লোক সমবেত হইয়া অপরিচিত ঘোর-নিদ্রাভিভুত পুরুষকে জাগাইয়া পরিচয় জিজ্ঞাসা করিলে, সে ধীরে ধীরে উত্তর দিল, “আমার নাম নাই, আমার নিবাস নাই, আমি জগতে একাকী ” নরেন্দ্র ঘোর উন্মত্ত । অষ্টম পরিচ্ছেদ ঃ রাজমহল SELDOM alas ! the power of logic reigns With much sufficiency in royal brains. –Cowper. নরেন্দ্র সেই দিনেই পীড়াক্রান্ত হইলেন, গ্রামের একজন ভদ্রলোক তাঁহার চিকিৎসা করাইতে লাগিলেন, কিন্তু অনেক দিন তাঁহার জীবনের আশা ছিল না। অনেক দিন পর ক্রমে নরেন্দ্রনাথ আরোগ্যলাভ করিতে লাগিলেন। যখন চলিবার শক্তি হইল, তখন সেই ভদ্রলোককে যথেস্ট ধন্যবাদ দিয়া, নরেন্দ্র সে গ্রাম ত্যাগ করিলেন। প্রথম শোক ও নৈরাশ্যের বেগ তখন ক্ষান্ত হইয়াছে, নরেন্দ্র হেমলতাকে ফিরিয়া পাইবার উপায় চিন্তা করিতে লাগিলেন। অনেক ভাবিয়া চিন্তিয়া স্থির করিলেন যে, সবাদারের নিকট আপন বিষয় পাইবার আবেদন করিব। পৈতৃক জমীদারী আমার হইলে, সবাথাপর নবকুমার অপশ্যই আমাকে কন্যাদান করিবেন। ఫిలి