পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/১৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब्रट्ध* ब्रछनाबब्ली প্রক্ষালন করিয়া একটী সন্দের বক্ষমলে শয়ন করিলেন। যে স্থানে নরেন্দ্রনাথ শয়ন করিলেন সেটী অতি মনোহর স্থল। বিশাল তমাল ব্যক্ষ সয্যের কিরণ নিবারণ করিতেছে, ও বক্ষের উপর হইতে দুই একটী পক্ষী যেন দিনের তাপে ক্লিস্ট হইয়া অতি মদস্বেরে ডাকিতেছে। নিকটে বক্ষের একপাশ্বে একটী পুরাতন কবর আছে, প্রস্তর স্থানে স্থানে বিদীণ হইয়া গিয়াছে ও অশ্বখ প্রভৃতি ব্যক্ষ লতাদি সেই কবরের উপর জমিয়াছে। কবরের একপাশ্বে পারস্যভাষায় একটী বায়েৎ লেখা আছে, তাহার অর্থ, “বন্ধা! আমার নাম জানিবার আবশ্যক কি ? আমি জগতে অভাগা, অসুখী ছিলাম। তুমি যদি হতভাগা হও আমার জন্য একবিন্দ আশ্রবেষাণ করিও।” মন্দ মন্দ যমনা-বায় সেই শীতল স্থানকে আরও সশীতল করিতেছে, কল্লোলিনী যমন সমধর কল কল শব্দে বহিয়া যাইতেছে। নরেন্দ্রনাথ অচিরাং নিদ্রায় অভিভূত l তিনি কতক্ষণ নিদ্রিত রহিলেন, তাহা স্থির করিতে পারিলেন না। নিদ্রায় একটী অপরাপ স্বপ্ন দেখিলেন। বোধ হইল যেন সেই অপবে গোরস্থান হইতে মত মনুষ্য পনেজীবিত হইল, সে একটী মুসলমান সীলোক ! মৃত্যুর শ্বেতবণ সত্রীলোকের মথে এখনও দেদীপ্যমান। স্ত্রীলোকের চক্ষ কোটরপ্রবিল্ট, শরীর ক্ষীণ, সমস্ত অবয়ব দুঃখব্যঞ্জক। গোরস্থানে ষে বায়েৎটী লেখা ছিল সত্ৰীলোক যেন সেই বায়েৎটী গান করিল, সে দুঃখব্যঞ্জক গীতধর্মনিতে নরেন্দ্রের মাদিত নেত্ৰ হইতে একবিন্দ জল ভূতলে পতিত হইল। মুসলমানী যেন সহসা আর একটী গীত আরম্ভ করিল। নরেন্দ্রের বোধ হইল যেন সে সবর তাঁহার অপরিচিত নহে, বোধ হইল যেন সে সবর সেই অভাগিনী জেলেখাকন্ঠ-নিঃসন্ত। নরেন্দ্র ভাল করিয়া দেখ! স্বয়ং জেলেখা গোরের উপর বসিয়া এই দুঃখগান গাইতেছে! নরেন্দ্রের স্বপ্ন ভঙ্গ হইল। চারিদিকে চাহিয়া দেখিলেন, কোথাও কেহ নাই। সষ্যে অস্ত গিয়াছে, সন্ধ্যার ললাটে একটী উতজবল তারা বড় শোভা পাইতেছে, সন্ধ্যার বায় রহিয়া রহিয়া মদ গান করিতেছে, যমনার নীল জল অধিকতর নীলবর্ণ ধারণ করিয়া বহিয়া যাইতেছে। নরেন্দ্র বিস্মিত হইলেন। এই জেলেখার গান তিনি নিদ্রাযোগে ইতিপবে তিন চারি বার শ্রবণ করিয়াছেন। জেলেখার প্রতি কি নরেন্দ্রের হৃদয় আকুট হইয়াছে ? নরেন্দ্র হৃদয় অনুসন্ধান করিয়া দেখিলেন, হৃদয় হেমলতাময় : জেলেখা কি মানবী নহে, জেলেখা কি পরী ? তবে মানবের প্রেমাকাঙিক্ষণী কেন ? নরেন্দ্রনাথ ভাবিতে ভাবিতে সেই গোরস্থানের দিকে আসিলেন, সহসা গোরের পাশ্ব হইতে স্বয়ং জেলেখা দণ্ডায়মান হইল! তাহার ক্ষীণ শরীর ও পাডুবণ বদনমণ্ডল দেখিলে বোধ হয় যেন যথার্থই কবর-গহবরস্থ মতদেহ পনেজীবিত হইল! বদন পান্ডুবণ বটে, কিন্তু নয়ন হইতে পাবাবৎ তীব্র জ্যোতিঃ বাহির হইতেছে। তীব্র জ্যোতিময়ী বামা সরোষে অধর দংশন করিয়া নরেন্দ্রের দিকে কটাক্ষপাত করিতেছে, বক্ষঃস্থলে একখানি তীক্ষয় ছুরিকার অগ্রভাগ দেখা যাইতেছে! এই নারী কি দুঃখগান গাইয়াছিল ? বোধ হয় না। জেলেখা নরেন্দ্রকে আসিতে ইঙ্গিত করিয়া আপনি অগ্ৰে চলিল। অনেক দর যাইয়া দগের ভিতর প্রবেশ করিয়া রাজপ্রাসাদের একটী অন্ধকার-গহে প্রবেশ করিল। নরেন্দ্র এতক্ষণ ইতিকৰ্ত্তব্যতাবিমুঢ় হইয়া পশ্চাৎ পশ্চাৎ আসিতেছিলেন। এক্ষণে গাহের ভিতর অন্ধকারে রমণীর সহিত যাইতে সঙ্কোচ করিয়া বলিলেন,—তুমি কে জানি না, আমি রাজপ্রাসাদে প্রবেশ করিবার অনুমতি পাই নাই। জেলেখা। প্রাসাদে যাইবার আমার অধিকার না থাকিলে তোমাকে আসিতে বলিতাম না । নরেন্দ্র। তথাপি তুমি কে জানি না, অজ্ঞাত স্থানে যাইব না। জেলেখা ককশস্বরে বলিল,—মতু্যভয় করিতেছ ? তোমাকে হনন করিবার ইচ্ছা থাকিলে আমি তাতারদেশীয়া, আমি এই ছরিকা এতক্ষণ ব্যবহার করিতে পারতাম না ? কিন্তু এই লও, সুঃ সু লিম, রিক্তহস্ত স্ত্রীলোকের সহিত যাইতে বোধ হয় বীরপরেষের কোন আ 交1 জেলেখার বিকট হাস্যধৰ্মনিতে নরেন্দ্রের মখেমণ্ডল ক্রোধে রক্তবর্ণ হইল। তিনি নিঃশব্দে জেলেখার পশ্চাৎ পশ্চাৎ যাইতে লাগিলেন। ক্ষণেক থাইলে পর জেলেখা এক স্থানে কতকগুলি বসন্তু দেখাইয়া নরেন্দ্রকে তাহা পরিধান করিতে কহিল। নরেন্দ্ৰ তুলিয়া দেখিলেন তাহা তাতারদেশীয় রমণীর পরিচ্ছদ। বিস্মিত হইয়া আবার জেলেখার দিকে চাহিলেন, জেলেখা এবার S 38