পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/১৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब्रट्भभ ब्रघ्ननाबली উপরিউক্ত ঘটনার অলপদিন পরেই শ্রীশচন্দ্র সপরিবারে পশ্চিম যাত্রা করিলেন। গঙ্গাতীরস্থ সমস্ত তীর্থস্থান দেখিয়া অবশেষে মথরো ও বন্দাবন যাইবার মানসে আগ্রায় পৌছিলেন। তথায় শ্রীশচন্দ্র প্রধান প্রধান হিন্দন-রাজাদিগের সহিত আলাপ করিলেন। তাঁহাদিগের মধ্যে একজন রাজার উপরোধে শ্রীশ সেই রাজার পরিবারের সহিত আপন পরিবারকে নওরোজার দিন প্রাসাদে পাঠাইতে বাধ্য হইয়াছিলেন। হেমলতা অগত্যা রাজপত-মহিলার বেশ ধরিয়া রাজপতরমণীদিগের সহিত আগ্রার বেগমমহলে গিয়াছিলেন। একত্রিংশ পরিচ্ছেদ ঃ জেলেখার পত্র THE cold in clime are cold in blood, Their love doth scarce deserve the name, But mine was like the lava flood, That boils in Etna's breast of flame. —Byron. নরেন্দ্র আগ্রাদুগের ভিতরে দপণে হেমলতার মুখচ্ছবি দেখিয়া প্রায় হতজ্ঞান হইয়াছিলেন তাহা আমরা পাবেই বলিয়াছি। অনেকক্ষণ পরে নিস্তব্ধ আকাশ ও শান্তপ্রবাহিণী নদীর দিকে চাহিতে চাহিতে ধীরে ধীরে আপন গহে যাইলেন। নরেন্দ্র গহে প্রবেশ করিলেন, একটী প্রদীপ জলিতেছে, লোক কেহ নাই। নরেন্দ্র দ্বার রদ্ধে করিয়া সীলোকের বস্ত্র খলিতে লাগিলেন । সহসা তাঁহার বক্ষঃস্থল হইতে একখানি পত্র ভূমিতে পড়িয়া যাইল। নরেন্দ্ৰ তুলিয়া দেখিলেন তাহা উন্দ ভাষায় লিখিত। নরেন্দ্র প্রদীপের নিকট বসিয়া পত্র খলিয়া পড়িতে লাগিলেন। অধিক না পড়িতে পড়িতেই বুঝিতে পারিলেন পত্র। তখন অধিকতর বিস্মিত হইয়া আরও পড়িতে লাগিলেন । পত্রে এই লেখা “নরেন্দ্ৰ ! “আমি পাগলিনী, আমি হতভাগিনী, সেই জন্য এই পত্র লিখিতেছি। আমি চক্ষতে আর দেখিতে পাইতেছি না, আমার মস্তক ঘুরিতেছে তথাপি মৃত্যুর পর্বে একবার মনের কথা তোমাকে বলিয়া যাই। তুমি যখন এই পত্র পড়িবে তখন অভাগিনী আর এ জগতে থাকিবে না। “আমি শাজিহানের জ্যেষ্ঠ কন্যা জেহানআরা বেগমের পরিচারিকা। যে দিন বারাণসীর যুদ্ধ হয়, কাৰ্য্যবশতঃ আমি ও মসররে নামক খোজা রাজা জয়সিংহের শিবিরে ছিলাম। সেই দিন আহত ও অচেতন হইয়া তুমি সেই শিবিরে আনীত হও, সেই দিন তোমাকে দশন করিয়া হৃদয়ে কালসপ ধারণ করিলাম। “দিনে দিনে, সপ্তাহে সপ্তাহে, আমি হলাহল পান করিতে লাগিলাম। আশ্রান্ত হইয়া সেই পীড়াশয্যার উপর নত হইয়া থাকিতাম, অনিদ্রিত হইয়া সেই নিদ্রিত কলেবর নিরীক্ষণ করিতাম । ঐ প্রশস্ত ললাট, ঐ রক্তবণ ওঠ দটীর দিকে দেখিতাম আর পাগলিনীপ্রায় হইতাম। পীড়াবশতঃ কখন তুমি আমাকে লক্ষ্য করিয়া তিরস্কার করিতে, আমি নিঃশব্দে মনের দুঃখে রোদন করিতাম। পীড়াবশতঃ কখন সস্নেহে আমার হস্ত ধরিতে, আমি পাগলিনী, আমার সমস্ত শরীর কণ্টকিত হইত। ঘরে কেহ না থাকিলে আগ্রহের সহিত তোমাকে চুম্বন করিতাম! ক্ষমা কর, আমি পাগলিনী ! “ক্রমে বারাণসী হইতে নৌকাযোগে তুমি দিল্লীতে আনীত হইলে। আমি কোন ছলে তোমাকে রাজপ্রাসাদের ভিতরে আনিয়া আপন ঘরে রাখিলাম ; কেবল তোমাকে চক্ষে দেখিবার জন্য আপন ঘরে রাখিলাম। তোমার মাখের দিকে চাহিয়া, চাহিয়া, রজনী যাপন করিতাম : কখন কখন আত্মসংযম করিতে না পারিলে তোমার সংজ্ঞাশন্য দেহ হৃদয়ে ধারণ করিতাম ! ఏ8 ఫి