পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Հի» রচনায় মাই; কিন্তু ইতিহাস সম্পবন্ধে গভীর জ্ঞানের অভাবই ইহার কারণ। সামাজিক উপন্যাসে রমেশচন্দ্রের বিশেষ গণ তাঁহার সক্ষম পৰ্য্যবেক্ষণশক্তি ও পল্লীগ্রামের দুঃখ-দারিদ্র্যপণে জীবনের প্রতি করণ ও অকৃত্রিম সহানুভূতি। তাঁহার সামাজিক উপন্যাসে কোন গভীর বিশ্লেষণ নাই। কেননা তিনি যে সমস্ত চরিত্র সস্টি করিয়াছেন তাহাদের মধ্যে কোন বিশ্লেষণযোগ্য জটিলতা নাই। শরৎচন্দ্র তাঁহার “পল্লীসমাজে যে গভীর স্তরে অবতরণ করিয়াছেন, তাহা রমেশচন্দ্রের ক্ষমতার অতীত। কিন্তু ইহার একটি কারণ এই যে, শরৎচন্দ্র পল্লীসমাজের বিকারগুলিকে অতি সক্ষমভাবে বিশ্লেষণ করিয়াছেন; রমেশচন্দ্র তাঁহার স্বাভাবিক সস্থ অবস্থারই বর্ণনা করিয়াছেন, বিকৃতির দিকটা কেবল উল্লেখ করিয়াই ক্ষান্ত হইয়াছেন, তাহাকে ফটাইয়া তোলেন নাই। সতরাং শরৎচন্দ্র সমাজদেহের ক্ষতপ্রদেশে যত গভীরভাবে ছুরিকা চালাইয়াছেন, রমেশচন্দ্র সমাজের সস্থদেহে সেরাপ পারেন নাই। কিন্তু এই বিশ্লেষণ-শক্তির অপ্রাচুৰ্য্য সত্ত্বেও তাঁহার চরিত্রগুলি বেশ সজীব ও বাস্তব হইয়া উঠিয়াছে। অনেক সময় তাঁহার লঘু ও অন্তরঙ্গ সপশটি ইংরাজী সাহিত্যের মহিলা ঔপন্যাসিকদের কথা স্মরণ করাইয়া দেয়। রমেশচন্দ্র আমাদের অনেক মহিলা ঔপন্যাসিকের অপেক্ষা অধিক মাত্রায় সত্ৰীজাতিসলভ সাহিত্যিক গণের অধিকারী। সামাজিক উপন্যাসে তাঁহার প্রধান অপর্ণতা একটা প্রবল আবেগের অভাব—মানবজীবনের সঙ্কট-মহন্ত গলি তাঁহার কল্পনাশক্তিকে খুব গভীরভাবে আন্দোলিত করে নাই। এইখানেই . বঙ্কিমচন্দ্রের সহিত তাঁহার প্রধান প্রভেদ । বঙ্কিমের আবেগ ও উন্মাদনা তাঁহার নাই; বকিমের ন্যায় জীবনের রহস্যময় দজ্ঞেয়তা, জীবন সমস্যার জটিলতা, জীবনের চরম মহোতগুলির ভাবৈশ্বযর্ঘ্য তিনি গভীরভাবে উপলব্ধি করিতে পারেন নাই। পক্ষান্তরে বঙ্কিম অপেক্ষা তাঁহার সত্যনিষ্ঠা অধিক ছিল : তাঁহার উপন্যাসে বণ্ডিকমের বিচিত্র রোমান্স ও ঐন্দ্রজালিক মোহ নাই । কিন্তু তাঁহার সরল সত্যনিষ্ঠাই কোন কোন সময়ে তাঁহার শ্রেষ্ঠত্বের কারণ হইয়াছে; মাধবীকঙ্কণে তিনি ব্যথ* প্রেমের যে অগ্নিজালাময় চিত্র দিয়াছেন, বঙ্কিমের উপন্যাসের রত্নভান্ডারের মধ্যেও তাহার অনরপে দশ্য আমরা কোথাও খুজিয়া পাই না।” (পঃ ৫০-৫১) রমেশচন্দ্রের সাহিত্য সাধনার মুল উৎস সবদেশ-বাৎসল্য বা দেশভক্তি। তিনি ইংরেজী ও বাঙ্গালা ভাষার মাধ্যমে এই দেশভক্তির চৰ্য্যা করিয়া গিয়াছেন। অসময়ে অবসর গ্রহণের মলে অন্যান্য কারণ থাকিলেও অপরিমেয় স্বদেশানরোগই তাঁহাকে এই কায্যে উদ্বুদ্ধ করে। সাহিত্য সাধনা তাঁহার জীবনের অঙ্গ হইয়াছিল বটে কিন্তু তাঁহার রচনাবলীর সম্যক অনুধাবন করিতে হইলে এই সার কথাটি ভুলিলে চলিবে না। স্বদেশের পর্বে গৌরবের পনরুদ্ধার, সমাজের তৎকালীন দাবীলতা বিদ্রনাস্তে এবং নতন পরিবেশে ইহার সংস্কার সাধন পবেক ইহাকে ] সবল সন্থে এবং সক্রিয় করিয়া তোলা ছিল তাঁহার জীবনের প্রধান লক্ষ্য। তিনি এই উদ্দেশ্যের পরিপন্থী যত বাধা বিঘা সকলই অগ্রাহ্য করিয়া সাহিত্যের মাধ্যমে ইহা সাধন করিতে সবিশেষ তৎপর হইয়াছিলেন। তিনি জানিতেন সাহিত্যের মাধ্যমে দেশসেবা যেরপে সম্ভব এমনটি অন্য কোন উপায়ে সম্ভব নয়। একারণ বিভিন্ন অবস্থার মধ্যেও সাহিত্য সাধনাকে তিনি অাঁকড়াইয়া ধরিয়াছিলেন। এবং সাংসারিক কমাবত্ত হইতে ছয়টি লইয়া একান্তভাবে সাহিত্য সাধনায় লিপ্ত হইতে চাহিয়াছিলেন। তাঁহার এই আকতি তৎকৃত সংসার’ উপন্যাসখানির গজেরাটী অনাবাদিকাকে ১৯o৭ সনের ১৭ই এপ্রিল লিখিত একখানি পত্রে জানা যায়। পাঠক লক্ষ্য করবেন তখন রমেশচন্দের জীবন-সায়াহ্ন। ইহার মাত্র আড়াই বৎসর পরে তিনি ইহধাম ত্যাগ করিয়াছিলেন। পত্ৰখানি এই : "Tell me your honest opinion, Sharada, do you not think I would do well to devote the remaining years of my life in writing such books as the Take of Palms'—ay, in compiling a complete history of the Indian people from the earliest times to the twentieth century-than to work and vegetate în Baroda ? I am the Amatya here, I am acting Dewan here, people look upon me with feelings of awe and respect—but I feel I am proving false to my higher pursuits, false to my destiny! I have done something in Baroda in these three years; let me plunge back to those pursuits which are dearest to