পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৪৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমাজ করিয়া আশ্রয় মাছতেন। এবার শরৎবাবা কাৰ্য্যস্থানে সন্ধাকে লইয়া যাইবেন; এক্ষণে দুই মাসের ছটা লইয়া বাড়ী আসিতেছেন, আজ তাঁহার তালপুকুরে আসিবার কথা—সেইজন্য সন্ধা এত প্রফুল্লহৃদয়া হইয়াছেন,-সেইজন্য বামিসোহাগিনী সযত্নে বেশভূষা করিতেছেন। नबश्व श्रीब्रट्छ्म : ठेाकूब्रभाङ्ग शब्राश्चश्व বিন্দন। বলি অ সন্ধা, সন্ধা, তোর কি আজ থোঁপা বাঁধা হবে না বোন ? সন্ধ্যা হয়ে গেল এখনও কি তোর চুলবাঁধা শেষ হল না ? এমন চুলবাঁধা ত বাপের জন্মেও দেখিনি! সন্ধা। দেখ না দিদি, এই ঠাকুরঝিকে বললেম একরকম করে চুল বেধে দিতে, তা ঠাকুরঝি যে কি করছেন তার ঠিক নেই। কালীতারা। হ্যাঁ লো হ্যাঁ, ঠাকুরঝিরই বড় সাধ, তোর মনে কিছু সাধ নেই, কেমন ? লোকের ভাল করলে মন্দ হয়, না ? তা এই নে বোন, এই খোঁপা বাঁধা শেষ হল, এখন রপার ফলে দটী দে দেখি, বসিয়ে দি। সন্ধা। না ঠাকুরঝি, রপোর ফলে কাজ নাই, ছেড়ে দাও, তোমার দটী পায়ে ধরি। কালী। আর নেকামিতে কাজ কি লো? এই নে ফল দিয়ে দিয়েছি, এখন একবার তোয়ালেখানা দাও তো বিন্দ দিদি, সাধার মুখখানা ভাল করে মছিয়ে দি ! কালীতারা ছাড়বার মেয়ে নয়। মুখখানি বেশ করে মছোইয়া দিয়া, গলায় হার পরাইয়া দিয়া, হাতে দুখানি গয়না পরাইয়া দিয়া, একখানা কালাপেড়ে কাপড় পরাইয়া পরে আরশাঁখানি সন্ধার সম্মুখে ধরিয়া বলিলেন,—এখন শরৎ বাড়ীতে এসে বলক, মনের মত বেী হয়েছে কি না ? লজায় সন্ধা আরক্তমখী হইয়া ছটিয়া পলাইলেন, বিন্দ ও কালীতারা হাসিতে লাগিলেন। কিন্তু সন্ধার আয়োজন এখনও শেষ হয় নাই। শুইবার ঘরে গিয়া একটি প্রদীপ জালিলেন, ড়িবে ভরিয়া পান সাজিয়া রাখলেন। কালীতারা ঘরে থাকতে রন্ধনকাৰ্য্য আর কাহাকেও দেখিতে হইত না, তবে সন্ধা মিছরিপানা, ফল-মল, মাগের ডাল ভিজান, প্রভৃতি যে সকল উপায়ে প্রথমে শরৎবাবকে বশ করিয়াছিলেন, সে সমস্ত আয়োজন করিতে ক্ষান্ত হইলেন না। রেকাবি করিয়া সমস্ত সাজাইতেছেন, এমন সময় সেই ঘরে ঠাকুরমাকে লইয়া বিন্দরদিদি প্রবেশ করিলেন। ঠাকুরমা সন্ধাকে দেখিয়া বলিলেন, “বলি আজ বড় আয়োজন যে লো!” সন্ধা লজ্জায় হেটমখী হইলেন। ঠাকুরমার পরিচয় দেওয়া আবশ্যক। বিন্দ ও সন্ধার সহিত তাঁহার কোন সম্পক ছিল কিনা জানি না, গ্রামের কোন ঘরের সহিত তাঁহার কি সম্পক তাহাও জানি না, তবে বদ্ধ বিধবাকে গ্রামের বদ্ধগণ আদর করিয়া মা বলিয়া ডাকিত, সতরাং তিনি গ্রামের মধ্যবয়স্ক ও যুবক-যুবতীদিগের “ঠাকুরমা” হইতেন। বাল্যকাল হইতেই বিধবা, সতরাং বামিঘর কখনও করেন নাই। মনটী সাদা, হৃদয় মমতাপণ", আর ছেলে দেখিলেই ঠাকুরমা কোলে লইতেন। গহিণীরা ঠাকুরমাকে বসাইয়া দুইটী গল্প করতেন। তবে ঠাকুরমা একটা রসিকা ছিলেন, এবং কথাগুলি একটা অম্লমধ্য, নিতান্ত মিছরিমাখান নয়! আজ অনেক দিন পর শরৎবাব বাড়ী আসিবেন, শরৎবাবকে ঠাকুরমা ছেলেবেলা বড় ভালবাসিতেন, তাই আজ একবার দেখিতে আসিয়াছেন। শরৎবাবকে গ্রামের লোক একঘরে করেছে, কিন্তু ঠাকুরমা মায়া ও মমতা কাটাতে পারেন নাই। হাসিতে হাসিতে ঠাকুরমা বলিলেন,—বলি আজ বড় আয়োজন যে লো! বিদেশে কি আর কারও স্বামী চাকরী করে না, না বিদেশ থেকে কেউ ফিরে আসে না ! এত আয়োজন কিসের লো ? বড়োঁ ঠাকুরমা এসেছে তা কি একবার চেয়ে দেখতে নেই ? সন্ধা। না ঠাকুরমা, তুমি এসেছ জানতাম না। আয়োজন আর কি ঠাকুরমা, একট, জলখাবার তৈয়ার করে রাখছি। তা , তুমি রেকাবিথানা সাজিয়ে দাও না। ঠাকুরমা। দেখি দেখি, কি রেখেছিস। ইস, এ যে পানফল, আক, মাগের ডাল, আর এ পাথরের গেলাসে বুঝি মিছরিপানা ? 886. “