পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৪৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२्षां পো ঘাম থেকে উঠতে না উঠতে গরম দধটকু প্রস্তুত,-বেড়াইয়া না আসিতে আসিতে বোমা পা ধুইবার জল লইয়া হাজির, স্নান না হইতে হইতে গরম ভাত প্রস্তুত ! একটা এদিক ওদিক হউক দেখি, একটা ব্যঞ্জন খারাপ হউক দেখি, অচিাইবার পর পান আনিতে একটু দেরি হউক দেখি, আহারের পর বিছানা প্রস্তুত হইতে একটা বিলম্বব হউক দেখি-বেীমা সেদিন সমস্ত দিন চৌদপসরষের প্রশংসা শুনিবেন, তাঁহার সেদিন ভাত খাইতে হইবে না! সেদিন বৌমার নাকি শরীরটা খারাপ ছিল, রধিতে একটা দেরি হয়েছিল,—ঘোষালের পো গলা সাড়া দিয়া বলিলেন, —বোঁয়ের যদি বাড়ীর কাজ একলা করিতে এতই কষ্ট হয়, তা হইলে আর একটী বোঁ আনাইবার ব্যবস্থা করিতে হইবে ! কথাটা শনে বেীমা নাকি আছাড় খেয়ে কোঁদেছিল, তার পরদিন ৪টা রাত্রির সময় রান্না চড়িয়ে দিয়েছিল ! জানলে ভায়া, এই রকম করিয়া বোঁ তৈয়ার করে। আমাদের হিন্দ ঘরের রীতি এই—তোমরা কলেজের ছেলে,—এ সব রীতি কি জানিবে। শরৎ। তা দাদামহাশয়, ঘোষাল মহাশয়ের সত্ৰী দুই ছেলেকে লইয়া এরপে স্বামীর কাজ করিয়া উঠিতে পারেন ? দাদা। পারাপারি আবার কি ? কাজ করিতেই হবে। শুনেছি নাকি বৌমা ইদানীং বড় কাহিল হইয়া পড়িয়াছে। পাকুর থেকে জল তুলিতে সেদিন আছাড় খাইয়া পড়িয়াছিল, সিড়ি উঠিতে হাঁপায়, একদিন নাকি রাঁধতে রধিতে মছা গিয়াছিল। তব ত কাজ বন্ধ হইবার ষো নাই-ঘোষালের পো নাকি বলেছে এক বৈী মীরলে আঁর এক বেী হবে-কিন্তু ঠিক সময়ে গরম দধটকুে বন্ধ হবে না। শুনেছি নাকি এ বোঁটা বড় অধিক দিন টিকিবে না, ঘোষালের পো গোপনে নাকি এদিক ওদিক ঘটকী পাঠাইতেছে! ঘোষালের পো পাকা ছেলে, যদি এ বোঁটী মরে, ছয় মাসের মধ্যে আবার নতন বেটী তৈয়ারী করিয়া লইবে । শরৎ দাদামহাশয়ের সঙ্গে একটা মিস্টালাপ করিতে আসিয়াছিলেন,—শোক করিতে আইসেন নাই। কিন্তু ঘোষালপত্নীর কথা শুনিয়া গোপনে ঝর ঝর করিয়া আশ্রজেল মোচন করিলেন। সে মেয়েটীকে বাল্যকাল হইতে জানিতেন, ছেলেবেলা একত্র খেলা করিয়াছেন, তাহার বিবাহ হওয়া দেখিয়াছেন, ক্রমে তাহার দুইটী সন্তান হওয়ার কথা শুনিয়াছেন। তাহার পর শরৎ বিদেশে ছিলেন, অন্য কথা বিশেষ শনিতে পান নাই। দুই বৎসর পর গ্রামে আসিয়া এ সমস্ত কথা শুনিয়া শরতের মনে অতিশয় ব্যথা লাগিল, অনেকক্ষণ চুপ করিয়া রহিলেন। পরে ধীরে ধীরে বলিলেন,—দাদামহাশয়, নারীর অসম্মান করা ও নারীকে যাতনা দেওয়া হিন্দ-ধমও নহে, হিন্দ-আচারও নহে। আজকালকার সবাথপর লোকে সবাথপরতা অবলম্বন করিতে চাহিলে হিন্দধমের দোহাই দেয়,—প্রবঞ্চকেরা প্রবঞ্চনা করিতে চাহিলে দেশীয় আচারের দোহাই দেয়,–হৃদয়শন্য লোকে সন্ত্ৰী-পরিবারের প্রতি নশংস আচরণ করিয়া আৰ্য্য-রীতির দোহাই দেয়। দাদামহাশয়, যাহারা সবাথাসাধনের জন্য দেশীয় আচারের দোহাই দেয়, বিলাসপরায়ণ হইয়া ধৰ্ম্মশাস্ত্রের দোহাই দেয়, এবং আত্ম-সখের জন্য ক্ষীণ, দাব’ল, বহশ্রমক্লিন্টা বহন্দঃখভাগিনী নারীর প্রতি নিন্দয় হয়—তাহারা আয্যও নহে, হিন্দও নহে, তাহাদের পশ করিলে ধমপরায়ণ হিন্দুদিগের জাত যায়। সবাথপরতা, প্রবঞ্চনা ও নিন্দয়ত৷ হিন্দ-আচার নহে-প্রকৃত হিন্দ-ধম্ম উদার, ও মহৎ ও নিঃসবাথ’। দ্বাদশ পরিচ্ছেদ ঃ সনাতনবাটীর জমিদার-বংশ তালপুকুরের অনতিদরে সনাতনবাটী নামে একটী বড় গ্রাম ছিল। তথায় এককালে সহস্র ঘর লোকের বাস ছিল, কিন্তু বদ্ধমানের মেলেরিয়া জনরে গ্রাম উৎসন্ন হইয়া গিয়াছে। এখনও তথায় পাঁচ-ছয়শত লোকের বাস আছে, তাহার মধ্যে প্রায় একশত ঘর ভদ্রলোক, কয়েক ঘর কল, গ্রামে বাজার বসিত, এবং চারিদিক হইতে মাছ, তরিতরকারি বিক্রয় হইতে আসিত। তস্তিন্ন কয়েকখানি স্থায়ী দোকান ছিল। একটা ইংরাজী বিদ্যালয়ে প্রায় ৭o । ৮০ জন ছেলে পড়িত, তাহা ভিন্ন বড় পাঠশালায় ব্যবসায়ী ও ইতর লোকদিগের প্রায় একশত ছেলে পড়িত। সনাতনবাটীর জমিদার মখোপাধ্যায়-বংশ পরাতন ঘর, পাঁচ-ছয় পর্ষ হইতে তাঁহাদের জমিদারী, এবং বংশটীও বিপল হইয়াছে। প্রাচীন জমিদার-বংশে যেমন হইয়া থাকে, সরিকে _ A B&లి