পাতা:রাজনারায়ণ বসুর বক্তৃতা (প্রথম ভাগ).pdf/১৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আহ্বান করিতেছে, কিন্তু সেই পুষ্পময় পথে কি সৰ্প লুক্কায়িত আছে, তাহা আমরা বিবেচনা করি না। ক্ৰোধ-শাণিত তরবারি আমাদের হস্তে দিয়া বৈরানির্যাতনের সুখ উপভোগ করিতে আহ্বান করিতেছে। লোভ, ধন মান যশ উপার্জন জন্য ধৰ্ম্মকে বিসর্জন দিবার উপদেশ প্ৰদান করিতেছে । কখন কোটি কোটি স্বর্ণমুদ্রার ছবি প্রদর্শন করিতেছে, কখন বা বৃহদায়তন রাজ্য লাভের আশার উদ্রেক করিতেছে, কখন বা লক্ষ লক্ষ মুখনিঃসৃত প্ৰশংসাধ্বনি কম্পনার কর্ণকুহরে প্রবেশ করাইতেছে, কখন বা লক্ষ লক্ষ পদানত লোকের চিত্ৰ মনের সম্মুখে আনুয়ন করিতেছে। মোহ, ঈশ্বর-বিস্মরণ-কারিণী মন্দির হস্তে লইয়া আমাদিগকে তাহ পান করিতে বলিতেছে, কহিতেছে-“অয়ং লোকঃ, নাস্ত্যপরঃ ”-এই লোকই সর্বস্ব, পরলোক নাই, এইরূপ উপদেশ প্ৰদান করিয়া আমাদিগকে তাহার অনুবন্ত্ৰী করিতেছে এবং সংসারে নিতান্ত আসক্ত করিয়া ফেলিতেছে। চৰ্ম্মময় কোষকে ফুৎকার দ্বারা বালক যেমন স্ফীত করে, সেইরূপ মদ বৃথা গর্ব দ্বারা আমাদিগের আত্মাকে স্ফীত করিতেছে। ধনী মানী জ্ঞানীর অগ্ৰগণ্য বলিয়া মনুষ্যকে নিজের নিকট প্রতীয়মান করাইতেছে। সাৎসরিক সম্পদূই প্রকৃত সুখের আকর এই মোহন মন্ত্র কর্ণকুহরে। প্ৰদান করিয়া মাৎসৰ্য আমাদিগকে পরীশ্ৰীতে কাতর করিতেছে। রিপু, সকল এই রূপ কুটিল বেশ ধারণ করিয়া আমাদিগকে আক্রমণ করে, তজ্জন্য তাহাদিগকে পরাজয় করা দুষ্কর । তাহারা উল্লিখিত কুটিল বেশ অপেক্ষা কুটিলতর বেশ ধারণ করে তখন তাহাদিগকে পরাজয় করা আরো দুক্ষর হয় ।