পাতা:রাজনারায়ণ বসুর বক্তৃতা (প্রথম ভাগ).pdf/১৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ २२ ] মিল হয় না। আত্মার সম্পূহ এখানকার কোন বস্তু হইতে সায় প্রাপ্ত হয় না। আমরা যতই পৃথিবীর বস্তুর প্রতি নির্ভর করিব ততই আমরা দীন ও দুঃখী হইব, আর যতই আমরা আপনার প্রতি নির্ভর করিব ততই ভাগ্যবান ও সুখী হইব । এ কথায় অনেক সত্য আছে, যে প্রকৃত সুখ জনক কিম্বা দুঃখ জনক বলিয়া কোন বস্তুই নাই, আত্মাই তাহাকে সুখ জনক অথবা দুখ জনক করে। আত্মা আপনাতে স্থিত আছে; সে স্বর্গে থাকিয়াও তাঁহাকে আনন্দ শূন্য লোকে অধবা নিরানন্দ লোকে থাকিয়াও তাহা স্বৰ্গে পরিণত করিতে পারে। আমরা ইচ্ছা করিলে অনেক পরিমাণে সুখী হইতে পারি। আর ইচ্ছা করিলে অনেক পরি মাণে দুঃখী হইতে পারি। আমরা যত মনে করি ইচ্ছাবৃত্তির ক্ষমতা আছে তাহা অপেক্ষ তাহার ক্ষমতা অধিক, যাহারা আপনাদিগের মনকে বশীভুত করিতে সমর্থ হইয়াছেন। তঁহীরাই ইচ্ছাবৃত্তির প্রভূত ক্ষমতা অনুভব করিতে সমর্থ হইয়াছেন। যতই আত্মা বাহ! বিষয়ের প্রতি নির্ভর করে ততই সে দুঃখী হয় ; যতই সে আপনার প্রতি নির্ভর করে ততই সে সুখী হয় যেহেতু বাহু বিষয় আমাদিগের পর ও আত্মাই আমাদিগের প্রকৃত আত্মীয় । কিন্তু যদি আত্মা অহস্কৃত হইয়া মনে করে যে সে আপনীর ক্ষমতাতে আপনি প্ৰকৃত সুখ সাধন করিতে সমর্থ তাহা হইলে সে আপনার সুখ সাধন করিতে সমর্থ হয় না। সে যতই ঈশ্বরের প্রতি নির্ভর করে ততই সে সুখী হয়। বাহ বিষয় তাহার প্রকৃত প্ৰভু নহে, ঈশ্বরই তাহার প্রকৃত প্ৰভু । সে যতই বাস্থ্য বিষয়ের অধীন হইবে, ততই সে দুঃখী হইবে, আর যতই সে ঈশ্বরের অধীন হইবে ততই সে সুখী হইবে।