পাতা:রাজনারায়ণ বসুর বক্তৃতা (প্রথম ভাগ).pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

98 זן বহন করিতেছে, আশাতে যাহার প্রফুল্ল চিৰ্ত্ত নৃত্য করিতেছে, হা! তিনি এই হর্ষের বত্মে আর কত দিন ভ্রমণ করবেন ? শমন। তঁহার পশ্চাৎ পশ্চাৎ নিঃশব্দে পাদনিক্ষেপ করিতেছে। অদ্য বুধবাসরে এই সমাজে আমরা যে উপবিষ্ট আছি, সকলেই কি আগামী বুধবাসর। পৰ্যন্ত অবশ্যই জীবিতবানু রহিব ? হা ! এ সংসারের এই সকল নিগুঢ় ভােব ভাবিতে হইলে হৃদয়ের শোণিত শুষ্ক হইতে থাকে, বিস্ময়ার্লবে মগ্ন হইয়া মনের বৃত্তি সকল স্তব্ধ হয়, বিষাদঘন দ্বারা জগৎ আবৃত হইয়া অন্ধীভুত ঈশ্বরের প্রতি প্ৰেম এ প্রকার দুর্ভাবনার এক মাত্ৰ ঔষধ স্বরূপ হইয়াছে। যিনি ঈশ্বরের সহিত প্ৰীতি করেন, তিনি কখন শোক করেন না ; তিনি সকল বস্তুকে অনিত্য জ্ঞান পূৰ্ব্বক কেবল পরমেশ্বরকে নিত্য জানিয়া সংসারের কণ্টকময় পথে লৌহদণ্ডের ন্যায় গমন করেন ; দুঃখ ভঁহার নিকটে সঙ্কুচিত হয়। স্ত্রী পুত্র বন্ধু পরিজন তিনি পান্থশালার আত্মীয়ের ন্যায় জ্ঞান করেন। ধন অপহৃত হইলে তঁহার কি হইবে ? তিনি তঁহার ধন এমন স্থানে সংস্থিত করিয়াছেন যেখানে অপহরণ অসম্ভব, যেখানে কাল পৰ্যন্ত আপনার হরণশক্তি প্ৰকাশ করিতে পারে। না । যদ্যপি তিনি ক্কচিৎ ঘোরতর রোগ দ্বারা আক্রান্ত হয়েন, তথাপি তিনি ভীত হয়েন না ; তিনি এইরূপ বিবেচনা করেন। যে যদ্যপি দুর্ঘটনা অত্যন্তই হয়, তবে মৃত্যুই হইবেক, ইহার অপেক্ষা অধিক আর কি হইতে পারে ? কিন্তু মৃত্যুকে তিনি সুখের বিযয় জ্ঞান করেন, কারণ প্ৰেমানন্দ বিশিষ্ট জ্যোতিৰ্ম্ময় লোকে তঁহার আত্মা ধাবিত হইতে ব্যগ্র রহিয়াছে ।