বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
৮৪
ত্রিপুরাসুন্দরী প্রতিষ্ঠা

ভৈরব হইতেছেন ত্রিপুরেশ শিব। উদয়পুরের উপকণ্ঠে ভৈরবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠিত আছেন। উদয়পুরের দেবী মন্দির ১৪২৩ শকাব্দে প্রতিষ্ঠিত (1501 A.D.)। ধন্যমাণিক্যের চট্টল জয়ের উল্লেখ পূর্ব্বেই করা হইয়াছে। চট্টল জয় দ্বারা বিশেষ করিয়া ভারতের সুপ্রসিদ্ধ তীর্থ চন্দ্রনাথের সহিত ধন্যমাণিক্যের নাম জড়িত হয়। এইরূপ কথিত হইয়া থাকে যে চন্দ্রনাথ তীর্থের স্বয়ম্ভূনাথ লিঙ্গকে ধন্যমাণিক্য স্বীয় রাজধানী উদয়পুরে আনিতে চাহিয়া ছিলেন। কিন্তু ভগবতী তাঁহাকে স্বপ্নে আদেশ দেন যেন ত্রিপুরাসুন্দরী বিগ্রহকে তথা হইতে আনিয়া উদয়পুরে প্রতিষ্ঠা করা হয়। স্বপ্নাদেশ অনুসারে ত্রিপুরাসুন্দরীকে চন্দ্রনাথ তীর্থ হইতে উদয়পুরে আনা হয়, এইরূপ জনশ্রুতি আছে।

 ত্রিপুরাসুন্দরী মূর্ত্তির পশ্চাতে ত্রিপুরারি শিবেরই ইতিহাস রহিয়াছে যাঁহার ক্রোধানলে ত্রিপুর ভস্মীভূত হইয়াছিল। ত্রিলোচনের বংশের কুলদেবীরূপে ত্রিপুরাসুন্দরী হয়ত রাজপাটের পরিবর্ত্তনে স্থান হইতে স্থানান্তরে আসিয়াছেন, প্রতীতের সময় হইতে হয়ত ত্রিপুরা অঞ্চলে আসেন এবং ত্রিপুরা রাজ্যের নানা ভাগ্যবিপর্য্যয়ের মধ্য দিয়া দেবী অবশেষে উদয়পুরে প্রতিষ্ঠিত হন। সুদূর অতীতের কথা সঠিক বলার সুবিধা কই?

 মহারাজ ধন্যমাণিক্য আরও অনেক মন্দির নির্ম্মাণ করেন এবং প্রসিদ্ধ ধন্যসাগর খনন করেন। দীর্ঘকাল রাজত্ব করিয়া তিনি ১৫১১ খৃষ্টাব্দে স্বর্গারোহণ করেন, সতী সাধ্বী কমলাদেবী স্বামীর চিতায় সহমৃতা হন।