পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
 
১৩৭
 

যশোধরমাণিক্য ও
জাহাঙ্গীর

এতকাল ত্রিপুরার সহিত গৌড়েশ্বরের শক্তির পরীক্ষা হইয়াছে, এইবার দিল্লীর বাদশাহ ত্রিপুরা ধ্বংসের জন্য স্বীয় বাহুবল প্রয়োগ করিলেন। ত্রিপুরা রাজ্যের পক্ষে ঘোর দুর্দ্দিন উপস্থিত হইল।

 নবাব ফতেজঙ্গ দিল্লী হইতে দুইজন প্রধান উমরা সঙ্গে লইয়া বিপুল বাহিনীসহ যুদ্ধ যাত্রা করিলেন এবং কিছুকাল মধ্যে ঢাকা আসিয়া পৌঁছিলেন। ফতেজঙ্গ ঢাকার কেল্লা পরিদর্শন করিয়া সেখান হইতেও সৈন্য সংগ্রহ করিলেন। ঢাকা নগরীতে বসিয়া ফতেজঙ্গ যুদ্ধের পরিকল্পনায় ব্যস্ত হইলেন, যাহারা সাক্ষাৎ সম্বন্ধে ত্রিপুরার গিরিবর্ত্ম জানে তাহারা পথ ঘাটের সন্ধান ফতেখাঁর গোচর করাইল। ফতেখাঁ যুদ্ধের নক্সা আঁকিয়া ফেলিলেন—একভাগ কৈলাগড় পথে ও অপর ভাগ মেহেরকুল (কুমিল্লা) পথে আসিয়া উদয়পুরকে যুগপৎ ঘেরাও করিয়া গলা টিপিয়া মারিবার ব্যবস্থা করিবে। নবাব ফতেখাঁ ঢাকায় রহিয়া গেলেন, তাঁহার নক্সা অনুযায়ী দুই উমরাহ ইস্পিন্দার ও নুরুল্যা দুইভাগে সৈন্য লইয়া বাদসাহী ফৌজসহ যাত্রা করিলেন। ত্রিপুরা রাজ্যের সীমান্তে পৌঁছিয়াই ইস্পিন্দার কৈলাগড় (কসবা) পথে এবং নুরুল্যা মেহেরকুল পথে অগ্রসর হইতে লাগিলেন।

 এতবড় সমরায়োজনেও যশোধরমাণিক্যের বীর হৃদয় দমিয়া যায় নাই ইহা অত্যন্ত গৌরবের কথা। তিনি মোগল সৈন্যের গতিরোধ করিবার জন্য দুইদিকেই সৈন্য পাঠাইলেন