পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/২২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
১৯৫
সমসের গাজি

 সমসের বুদ্ধিমান ছিলেন, তিনি দেখিলেন যুদ্ধে যদিচ তাঁহার জয় হইয়াছে কিন্তু ত্রিপুরার হৃদয় জয় করা তাঁহার পক্ষে অসম্ভব। কেবল তরবারীর শক্তিতে নিজকে ত্রিপুরেশ্বররূপে চালান যাইবে না, সুতরাং ধর্ম্মমাণিক্যের পৌত্র বনমালীকে লক্ষ্মণমাণিক্য নামে ঘোষিত করিয়া সিংহাসনে বসাইলেন, নিজে আড়ালে রহিলেন। ইতিহাসের কি আশ্চর্য্য যুগধর্ম্ম, বঙ্গের সিংহাসনে সেই একই দৃশ্য চলিতেছিল। তখন পলাশীর অভিনয় শেষ হইয়াছে, নবাব সিরাজউদৌল্লার জীবনান্ত ঘটিয়াছে, বঙ্গের তক্‌ততাউসে মির্জ্জাফর ক্রীড়নকরপে বিরাজমান। সমসের বুঝিয়াছিলেন যদি হাতী কর বন্ধ হইয়া যায় তবে বাঙ্গালার সরকার হইতে তাঁহার উপর চাপ আসিবে। তাই লক্ষ্মণমাণিক্য দ্বারা মুর্শিদাবাদে নবাবের নিকট জানাইয়া দিলেন, হাতীর খেদা প্রস্তুত হইতেছে শীঘ্রই নবাবের কর পাঠান হইবে। এইভাবে লক্ষ্মণমাণিক্য দ্বারা দুইদিক সামলাইয়া লইলেন।

 ফকিরের বাক্য অব্যর্থ প্রমাণিত হইল। সমসের গাজি ত্রিপুরারাজ্যে সর্ব্বময় প্রভু হইলেন। চট্টগ্রাম নোয়াখালী ও ত্রিপুরায় দূরে দূরে কিল্লা প্রস্তুত করিয়া সমসের আপন অধিকার সুদৃঢ় করিয়াছিলেন। কালের প্রবাহে যদিচ ইহারা বিলুপ্তপ্রায় তথাপি সোণামুড়ার গড়খাই ‘গাজির কোঠ’ ও ফেণী নদীর তীরবর্ত্তী সমসেরের কিল্লাস্থান কিল্লাঘাট নামে আজিও সুপরিচিত। এই বিস্তৃত অঞ্চলে সমসের একাধিপত্য