পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
 
৩৩

হেড়ম্বরাজ ও ত্রিপুর
রাজের যুদ্ধ

হেড়ম্বরাজ্যে মাতামহ আমাকে রাজা করিয়া গিয়াছেন, তাই বলিয়া কি আমার পিতৃরাজ্যের অধিকার ক্ষুণ্ণ হইয়া যাইবে?”

 দূত-হস্ত হইতে পত্র পড়িয়া দাক্ষিণ ত অবাক! তাঁহার কনিষ্ঠ দশ ভাইকে ডাকাইলেন, সকলে মিলিয়া ইহার উত্তর রচনা করিলেন। লেখা হইল আপনি ঠিকই লিখিয়াছেন যে জ্যেষ্ঠপুত্রের সিংহাসনে অধিকার, সেইমতে এ রাজপাট আপনারই। কিন্তু পিতা বর্ত্তমানে আপনাকে মাতামহ, হেড়ম্বরাজ্যের যৌবরাজ্য দেন, তখন পিতৃদেব আমাকে ত্রিপুরা রাজ্যের যুবরাজ করেন। যদি পিতা ত্রিপুরার সিংহাসন আপনাকে দিতে চাহিতেন তবে আপনাকে তখনই আনাইয়া অভিষেক করাইতেন। পিতা যখন তাহা করেন নাই তখন তাঁহার ব্যবস্থার ব্যতিক্রম করি কি করিয়া?

 পত্র পাইয়া হেড়ম্ব-রাজ ক্রোধে জর্জ্জরিত হইলেন। কি এমন কথা! সিংহাসন অমনি দিবে না, আচ্ছা দিবার ব্যবস্থা আমি করিব। হেড়ম্বরাজ স্থির করিলেন, যে অধিকার লেখনীর দ্বারা মিলিল না তাহা তরবারি সাহায্যে অবশ্যই মিলিবে। এই ভাবিয়া বিপুল সৈন্য সমাবেশ করিলেন। দেখিতে দেখিতে হেড়ম্ব-সৈন্যের ঘনঘটায় ত্রিপুরা রাজ্যে বিষম ঝড়ের সূচনা হইল। সাতদিন অবিরত অস্ত্র বর্ষণ হইল, বিপক্ষ সৈন্যের দুর্ব্বার স্রোত রোধ করিতে না পারিয়া দাক্ষিণ রণে ভঙ্গ দিলেন। দৃক্‌পতির জয় হইল, লেখনীর দ্বারা যাহা পান নাই,